অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত বন্ডি বিচের গুলির ঘটনায় পুলিশ জানিয়েছে, সন্দেহভাজন দুইজনের মধ্যে একজন ভারতের দক্ষিণাঞ্চল থেকে এসেছেন। পুলিশ আরও বলেছে, ওই ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ খুবই কম ছিল। বন্দুক হামলার ঘটনায় নিহত সাজিদ আকরাম (৫০) সিডনিতেই মারা গেছেন, তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পরই নিহত হন। ভারতীয় রাজ্য তেলেঙ্গানার একজন পুলিশ কর্মকর্তা খবরটি নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, সাজিদ হায়দরাবাদ থেকে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসেন। ১৯৯৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস শুরু করার পর থেকে তিনি মাত্র ছয়বার ভারতে এসেছেন। তার পরিবারের পাশাপাশি, তার উগ্রবাদী মতবাদ বা কোনো কার্যক্রমের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা সম্পর্কে পুলিশের ধারণা নেই। সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ এখনও সাজিদ ও তার ২৪ বছর বয়সী ছেলে নাভিদকে দেখছে, যারা ১৫ জনকে হত্যা ও আরও কয়েক ডজন মানুষকে আহত করার ঘটনায় জড়িত বলে মনে করা হচ্ছে। সাজিদ আকরাম ভারতীয় পাসপোর্টধারী ছিলেন, কিন্তু তার সন্তানরা অস্ট্রেলিয়ার পাসপোর্ট ও নাগরিকত্বের অধিকারী। তেলেঙ্গানা পুলিশের একজন কর্মকর্তা বিবিসি তেলেগু সার্ভিসকে বলেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসনের পর সাজিদ ছয়বার ভারতে এসেছে। মূলত পারিবারিক কারণে ভ্রমণ করেছেন, যেমন সম্পত্তি সংক্রান্ত কিংবা বৃদ্ধ বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য। তবে তিনি তার পিতার মৃত্যুকালে ভারতে আসবেননি।’ পুলিশ আরও জানাচ্ছে, সাজিদ ও তার ছেলে কেন উগ্রপন্থায় জড়িয়ে পড়েছেন, তার সঙ্গে ভারতের বা তেলেঙ্গানার কোনও সরাসরি যোগসূত্র পাওয়া যায়নি। বর্তমানে তদন্ত চলছে, কেন তারা বন্ডি বিচে হামলার কিছু সপ্তাহ আগে ফিলিপাইনে গিয়েছিলেন। দেশটির ইমিগ্রেশন দফতর বলেছে, বাবা ও ছেলে পহেলা নভেম্বর সেখানে পৌঁছান এবং ২৮ নভেম্বর দেশে ফিরে আসেন। ভ্রমণের সময় সাজিদ ভারতীয় পাসপোর্ট ব্যবহার করেন, আর তার ছেলে অস্ট্রেলিয়ান পরিচয়পত্র। অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন বা এবিসি জানিয়েছে, তাঁরা দুইজনের ‘সামরিক প্রশিক্ষণ’ নেওয়ার জন্য সেই দ্বীপদেশে গিয়েছিলেন, তবে এই তথ্যের সত্যতা তদন্তকারীদের দ্বারা নিশ্চিত হয়নি। চরমপন্থী গোষ্ঠী আইএস ২০১৫ সালে প্যারিস হামলার দায় স্বীকার করে, যার ফলে ইউরোপ ও আমেরিকাজুড়ে অনেক সন্ত্রাসী হামলা হয়। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, নাভিদ আকরাম ২০১৯ সালে নানা ধরনের সন্দেহের ভিত্তিতে প্রথম কর্তৃপক্ষের নজরে আসেন, কিন্তু তখন তারা কোনও হুমকি বা সহিংসতার সঙ্গে তার যোগসূত্র খুঁজে পাননি। এ সময়ে রবিবারের গুলির ঘটনায় নিহতদের প্রথম শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয়। এই ঘটনায় মোট ১৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত ২১ ব্যক্তি এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

