পীরগাছা উপজেলা প্রশাসনের একাধিক কর্মকর্তা মহান বিজয় দিবসের গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকায় প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে। যদিও অফিসে অনিয়মিত উপস্থিতির অভিযোগ রয়েছে, তবুও মহান বিজয় দিবসের মতো জাতীয় অনুষ্ঠানে তারা গুরুত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেননি। এই অনুপস্থিতির কারণে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
এসব ঘটনায় জানানো হয়, রংপুরের পীরগাছা শহীদ মিনারে মঙ্গলবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ বসাকের নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। তবে, গুরুত্বপূর্ণ এই কর্মসূচিতে অনুপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানভীর হাসনাত রবিন, খাদ্য নিয়ন্ত্রক আকলিমা বেগম, সমাজসেবা কর্মকর্তা এনামুল হক, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সেলোয়ারা বেগম ও সাব-রেজিস্ট্রার।
পুষ্পস্তবক অর্পণের সময় সমাজসেবা অফিসার এনামুল হক অনুপস্থিত থাকলেও পরে তাঁকে দেখা গেলেও অন্য কর্মকর্তাদের দেখা মেলেনি। স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এই জাতীয় দিবসের কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক হলেও বেশিরভাগই গোপন করেছেন কিংবা অনুপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আকলিমা বেগম মাঝে মাঝে অফিসে আসলেও দেরিতে এবং সময়ের বাইরেও উপস্থিত থাকেন। তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই অফিস না করা ও কাজের বদলে গল্পগুজবের অভিযোগ রয়েছে। একইভাবে, সমাজসেবা কর্মকর্তা এনামুল হকের বিরুদ্ধেও অফিসে দেরিতে আসার অভিযোগ রয়েছে। তিনি মন্তব্য করেন, তিনি যদি ইউনিয়ন পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করেন বা না করেন, সে অনুযায়ী নিজের অবস্থান বদলান।
স্থানীয়রা জানান, এ ধরনের দায়িত্বহীনতা প্রশাসনিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে এবং সাধারণ মানুষের সেবা পাওয়ার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বিজয় দিবসের এই অনুষ্ঠানে কর্মকর্তাদের বক্তব্য নিবেদন করতে বিভিন্ন দফায় ফোন করা হলেও তারা যোগাযোগ করেনি। একই সঙ্গে, প্রধানমন্ত্রী পতাকা উত্তোলন ছাড়াই আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। পরে কর্মচারীরা সরকারি বাহিনী দিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন, যা সরাসরি জাতীয় পতাকাকে অসম্মান বা অবমাননা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ এনামুল আহসান বলেন, আমি বর্তমানে জেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে থাকায় বক্তব্য নিতে পারিনি। অন্যদিকে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি বা আর্থিকভাবে জবাব দেননি।
অতঃপর, এইসব বিষয় নিয়ে প্রশ্নের উত্তর বা মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

