বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হলো ‘আহসান গ্রুপ প্রেজেন্টস প্যাডেল স্ল্যাম ২.০’, যা পাওয়ার্ড বাই অ্যাসেট ডেভেলপমেন্টসের সহযোগিতায় আয়োজন করা হয়েছে। এই তিন দিনব্যাপী প্রতিযোগিতা শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) তার শেষ প্রহর স্পর্শ করে, যেখানে ফাইনাল ম্যাচের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে এক বিশাল ক্রীড়া উৎসবের।
প্রতিযোগিতা দেখতে উপস্থিত ছিলেন খেলা উপভোগ করতে আসা ক্রীড়াপ্রেমীরা ছাড়াও বসুন্ধরা গ্রুপের কর্মকর্তারা ও বিভিন্ন স্পন্সর প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা। মেনস অ্যাডভান্সড, মেনস ইন্টারমিডিয়েট ও উইমেন্স ডাবলস ক্যাটাগরিতে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়রা নিজেদের দক্ষতা প্রদর্শনের মাধ্যমে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
ফাইনালে মেনস অ্যাডভান্সড ক্যাটাগরিতে রোমাঞ্চকর লড়াই শেষে জিউসেপে ও ম্যাশ জুটি ৬-৪, ২-৬ এবং ৬-২ সেটের জয় নিয়ে চ্যাম্পিয়ন শিরোপা ঘরে তোলে। রানারআপ হন রাকিন ও সাদমান। অন্যদিকে, মেনস ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরিতে তাইসির ও পলক ৭-৫, ৬-৩ দিয়ে শিরোপা জেতেন। উইমেন্স ডাবলসে ব্রিয়ানা ও ফারিহা ৬-০ এবং ৬-১ সেটে দাপট দেখিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন, যেখানে রানারআপ হলেন নাভেরা ও তাশফিয়া।
অতিথিদের এবং খেলোয়াড়দের শুভেচ্ছা ও উৎসাহ দিতে পুরস্কার প্রদান করেন বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির হেড অফ অপারেশনস মাসুদুর রহমান মান্না। অনুষ্ঠানের প্রথমে অ্যাসেট ডেভেলপমেন্টসের ডিরেক্টর নাভেরা খান ও আহসান গ্রুপের প্রতিনিধির হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। আয়োজকেরা জানায়, স্পন্সরদের সহযোগিতা ছাড়া এমন বড় কোনও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন সম্ভব নয়। চ্যাম্পিয়ন ও রানারআপ দলগুলোকে ট্রফি, মেডেল এবং অর্থনৈতিক পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় পরবর্তী ধাপে।
নির্মিত এই আয়োজনের অন্যতম বড় আকর্ষণ ছিল এই ভেন্যুতির পুরস্কারমূল্য, যা মোট ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা। প্রতিটি ক্যাটাগরির চ্যাম্পিয়ন পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা এবং রানার্সআপরা ২৫ হাজার টাকা করে। এই প্রাইজপুলের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা ও উদ্দীপনা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়াও, অংশগ্রহণকারীদের জন্য বিভিন্ন স্পন্সর প্রতিষ্ঠান থেকে উপহার দেওয়া হয়। শেয়ারট্রিপের পক্ষ থেকে ঢাকাকক্সবাজারের বিমান টিকিট, লোটো থেকে পাঁচ হাজার টাকার গিফট ভাউচার এবং গোল্ডস জিমের পক্ষ থেকে সদস্যপত্র সরবরাহ করা হয়।
এই আসরে প্রধান স্পন্সর ছিল আহসান গ্রুপ, অ্যাসেট ডেভেলপমেন্টস, দৌড়, ব্রুভানা, শেয়ারট্রিপ, লোটো, এম.এইচ.সি, গোল্ডস জিম ও জুলকানসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান। দেশের একমাত্র স্পোর্টস চ্যানেল, টি-স্পোর্টস, ছিল এই প্রতিযোগিতার ব্রডকাস্ট পার্টনার, যা সরাসরি সম্প্রচার করে খেলাগুলো এবং তরুণ প্রজন্মের মধ্যে প্যাডেলের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে তুলছে।
আয়োজকরা আশাবাদী, এই ধরণের আয়োজন বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জন্য প্যাডেল খেলাকে আরও জনপ্রিয় করে তুলবে এবং দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
প্যাডেল স্ল্যামের এটি দ্বিতীয় আসর। আমেরিকা ও ইউরোপে জনপ্রিয় এই র্যাকেটভিত্তিক খেলাটা দেখতে হলেও এর নিয়ম ও কৌশল বিশেষ। ছোট কোর্টে ডাবলসে খেলা হয়, যা টেনিসের মতো হলেও অনেক ভিন্ন। বাংলাদেশের ক্রীড়া দর্শকদের মধ্যে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা লাভ করছে এই খেলা, যেখানে বসুন্ধরা গ্রুপের অবকাঠামোগত সহায়তা ও নিয়মিত আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ধারাবাহিক আয়োজনের ফলে নতুন প্রজন্মের মধ্যে এই ক্রীড়ার প্রতি আগ্রহ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

