অস্কারের ৯৮তম আসরে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যর্থ হয়েছে চলচ্চিত্র ‘বাড়ির নাম শাহানা’। এটি বাংলাদেশের জন্য দুঃখজনক ঘটনা, কারণ এই চলচ্চিত্রটি দেশের জন্য একগুচ্ছ গর্বের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই ছবি ছাড়াও অন্যান্য চলচ্চিত্র জমা পড়েছিল, যেমন- ‘সাবা’ (মাকসুদ হোসেন পরিচালিত), ‘নকশিকাঁথার জমিন’ (আকরাম খানের), ‘প্রিয় মালতী’ (শঙ্খ দাশগুপ্ত) এবং ‘ময়না’ (মনজুরুল ইসলাম মেঘের)। তবে, এই কোনো চলচ্চিত্রই চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকায় জায়গা পায়নি। বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজের তত্ত্বাবধানে গঠিত অস্কার কমিটি, যেখানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিক, যারা খোলাখুলি এই পছন্দের ব্যাপারে আলোচনা করেছেন।
‘বাড়ির নাম শাহানা’ সিনেমাটি ৯০ দশকের সত্য ঘটনা অবলম্বনে লিসা গাজী পরিচালিত। এটি প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের কোনও নারী পরিচালকের সিনেমা হিসেবে অস্কারে প্রতিনিধিত্ব করেছে। নাটকীয় এই গল্পের কেন্দ্রবিন্দু দীপা, যার চরিত্রে অভিনয় করেছেন লক্ষ্মীট্যারা ব্যান্ডের গায়িকা আনান সিদ্দিকা। গল্পের মধ্যে উঠে এসেছে একজন মেয়ের জীবনের সংগ্রাম, যে কৈশোরে বিয়ের পর স্বামীর অত্যাচার থেকে মুক্তির জন্য লড়াই করে। ছবিটির চিত্রনাট্য যৌথভাবে লিখেছেন নির্মাতা লিসা গাজী ও দীপা চরিত্রে অভিনয় করা আনান সিদ্দিকা।
ছবিটি গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের প্রেক্ষাগৃহে বাণিজ্যিকভাবে মুক্তি পেয়েছে। এর পরে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসিত হয় এবং বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করে। ‘জেন্ডার সেন্সিটিভিটি অ্যাওয়ার্ড’ও জিতে নেয় এই ছবি, যা জিও মামি মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম সম্মান। এর প্রযোজনা অংশীদার হিসেবে কাজ করেছে গুপী বাঘা প্রোডাকশন এবং লন্ডনভিত্তিক শিল্পসংগঠন কমলা কালেক্টিভ।
অস্কার হিসেবের এই আসরে মোট ১২টি বিভাগের সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রকাশ পেয়েছে। এর মধ্যে অন্য বিভাগগুলো হলো– অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, কাস্টিং, চিত্রগ্রহণ, প্রামাণ্য চলচ্চিত্র, মেকআপ অ্যান্ড হেয়ারস্টাইলিং, মৌলিক সংগীত, গানের বিভাগ, শব্দ, এবং ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস। এই অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ, এবং আশা করা যাচ্ছে ভবিষ্যতে আরও ভাল ফলাফল আসবে।
