রাজশাহী নগরীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে যাওয়ার পথে ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুসংবাদে জনমনে গভীর শোক ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হত্যাকারীদের দ্রুত বিচার দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এই কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে, উত্তেজিত বিক্ষোভকারীরা বুলডোজার ব্যবহারে করে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভেঙে ফেলে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে, নগরীর কুমারপাড়ায় অবস্থিত এই কার্যালয়ে ভাঙচুর শুরু হয়। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে চলা এই অভিযান শেষে ভোর সাড়ে তিনটায় ভবনটি সম্পূর্ণ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। এর আগে থেকেই শহরগুলোর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনকারী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সাহেব বাজার, জিরো পয়েন্ট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকাগুলোতে মিছিল বের করেন। হাতে তৈরী বিভিন্ন স্লোগানে তারা দাবি করেন, ‘আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে দাও’, ‘হাদি ভাই মরল কেন, ইন্টারিম জবাব দাও’ এবং ‘রুখে দাও জনগণ, ভারতীয় আগ্রাসন’ পর্যায়ক্রমে সামাজিক ও রাজনৈতিক সতর্কতা ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
এদিকে, রাত সাড়ে ৯টার দিকে রাকসুর সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন আম্মা তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে রাজশাহীর জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি লেখেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আবারও জোশে গর্জে উঠার সময় এসেছে। তিনি সবাইকে আলুপট্টির আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে জড়ো হওয়ার অনুরোধ করেন এবং বুলডোজার প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেন।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা, যারা হাদির হত্যার বিচারের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন। পরে তারা নগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নেতারা ‘আধিপত্যবাদ বিরোধী শিক্ষার্থী’ ব্যানারে আন্দোলনে যোগ দেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, এক পর্যায়ে, ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয় বুলডোজার দিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। এই ঘটনার ফলে পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ সময় ধরে পরিস্থিতি থমথমে থাকে।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুরো নগরীতে উত্তেজনা বিরাজ করছে, এবং পরিস্থিতি শান্ত করতে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীজনগণের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।

