যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন দেশের শীর্ষ গণঅভ্যুত্থানপ্র dôন্থ ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির স্মৃতি ও অবদান হৃদয়ে অম্লান থাকবে বলে গুরুত্বের সঙ্গে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুরে হাদির জানাজার আগে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এই কথা বলেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ওসমান হাদি আমাদের হৃদয়ে গভীরে থাকবেন সবসময়। তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ডাক and সংগ্রামের এক অনুপ্রেরণামূলক পথপ্রদর্শক। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, ততদিন তার স্মৃতি ও আদর্শ আমাদের মনের মাঝে জেগে থাকবে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘আমরা প্রিয় ওসমান হাদিকে শেষবিদায় দিতে আসিনি। তিনি আমাদের মন ও হৃদয়ে বসবাস করছেন। তাকে কখনোই হারানো সম্ভব নয়।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘ওসমান হাদির মূল মন্ত্র ছিল বল বীর চির উন্নত মম শির, যা আমাদের শক্তি ও সাহসের উৎস। তিনি আমাদের শেখান, কখনো মাথা নত না করতে। এই মন্ত্র আমাদের অন্তরে স্থায়ীভাবে রয়ে যাবে।’
পরে দুপুর আড়াইটার দিকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধানসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে, আজ ভোর ৯:৪০ মিনিটে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশসহ নানা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তার মরদেহ রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। স্বজন, সহযোদ্ধা ও সহকর্মীরা এই সময় উপস্থিত ছিলেন।
ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ ফের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে শেষ গোসল সম্পন্ন হয়। এরপর তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে জানাজা শেষে ঢাকার জাতীয় সংসদ দক্ষিণ প্লাজায় দাফন করা হবে।
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আজ একদিনের সরকারি শোক ঘোষণা করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদেশের বাংলাদেশ মিশনসহ বিভিন্ন স্থানে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।
শরিফ ওসমান হাদি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের অন্যতম মুখপাত্র ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন ঢাকা-৮ আসনে। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের অন্যতম নেতৃত্ব।
গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণার সময়, রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরবর্তীতে পরিবারের সিদ্ধান্তে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানেই ১৮ ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার মরদেহ ঢাকায় ফিরে আসার আগেই শুক্রবার তার মরদেহ শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। জানাজা শেষে তাকে কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে দাফন করা হবে।
আজকের খবর / এমকে

