ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যু কেন্দ্র করে সৃষ্ট উত্তাল পরিস্থিতির সুযোগ নেয়া হয় দেশজুড়ে সংঘাত, নাশকতা ও অগ্নিসংযোগের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার ক্ষেত্রে। এসব ঘটনার মধ্যে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোও অচেনা শিকার হয়েছে। বিশেষ করে, দেশের অন্যতম প্রধান সংগীত শিক্ষা কেন্দ্র ‘ছায়ানট’-এর ভবনে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে সংস্কৃতি অঙ্গনে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছায়ানটের কার্যালয়ে হামলার বেশ কিছু ছবি সামাজিক মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ওই ছবিগুলো দেখে সাধারণ মানুষজনের মধ্যে আতঙ্ক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আর শুক্রবার সকালে সেই ধ্বংসযজ্ঞের ছবি শেয়ার করে জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী শায়ান চৌধুরী অর্ণব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোর মধ্যে দেখা যায়, ছায়ানটের ভেতর তাণ্ডব চালানো হয়েছে। একটি ছবি দেখায়- হারমোনিয়ামটি ভেঙে চুরমার করে রাখা হয়েছে, তবলাগুলো এলোমেলো পড়ে আছে, বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাঙচুরের চিহ্ন আছে এবং চারপাশে কাগজপত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। আরেকটি চিত্রে দেখা যায়, একটি কক্ষের আসবাবপত্র ও নথিপত্র পুড়িয়ে ছাই করে দেওয়া হয়েছে। এই ধ্বংসাবশেষে দেখে অনেকেই স্তব্ধ হয়ে গেছেন।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে সংগীতপ্রেমীরা আতঙ্কে আছেন, অর্ণবসহ অনেক সংগীতশিল্পী এই ভয়াবহ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টে রাজনৈতিক সচেতনতার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের সক্রিয়ভাবে ভোট দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘অন্যথায় আমরা সংগীতশিল্পীরা বিপদে পড়ব। দেখুন, এরা ছায়ানটের মতো সংগঠনের জন্য কী করছে! আমাদের জন্য মূল আসল অস্ত্র হলো ভোট দেয়া এবং অন্যদেরও ভোট দিতে উৎসাহিত করা।’
তবে এই পোস্টের নিচে একজন নেটিজেন প্রশ্ন করেছেন, ‘আমরা কাকে ভোট দেবো অর্ণব ভাই?’
বলা হচ্ছে, সচেতন মহলের দাবি, এই হামলার সঙ্গে শহীদ হাদির বা তার সমর্থকদের সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। অনেকেরই ধারণা, এই ধরনের নাশকতাকর্মীরা মূলত নিজের ভিন্ন উদ্দেশ্য হাসিল করতে হাদির নাম ব্যবহার করছে। হত্যাকারী বা ভিন্ন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কেউ যদি এই হামলার সঙ্গে জড়িত থাকে, তা স্পষ্ট নয়।

