ইনকিলাব মঞ্চ শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচারপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দ্রুত একটি বিচারিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেন সংগঠনের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের। তিনি বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয় দরকার। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক পেশাদার তদন্ত সংস্থার সহযোগিতা নিতে হবে। আমরা চাই স্পষ্ট ও প্রকাশ্য বিচার, যেন কেউ বিভ্রান্তিতে না পড়ে।আব্দুল্লাহ আল জাবের উল্লেখ করেন, শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের এক অমোঘ প্রতীক। তার হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো যথাযথ তদন্ত ও বিচারের অভাবে জাতি উদ্বিগ্ন। তিনি আরও বলেন, শহীদ হাদির জানাযায় লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি এই বিষয়ে দেশের জনগণের অভিযোগ ও অঙ্গীকারের প্রমাণ। কিন্তু দুঃখজনক হলো, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যে বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে তার নাম বা হত্যার প্রসঙ্গ স্পষ্টভাবে উল্লেখ হয়নি, যা একটি গভীর দুঃখের বিষয়। এই ত brushে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দপ্তর থেকে এই ঘটনার সত্যতা আড়াল করার চেষ্ঠা করা হচ্ছে, কিন্তু জনগণ এর কাছে মুখচোখ চুরির মতো কিছু নয়। আমরা বলতে চাই—জাতি চুপ করে থাকবেনা।সংগঠনের নেতা জাবের আরও বলেন, সরকারের বিবৃতিতে স্পষ্ট নয়—খুনির বিষয়ে কোন নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই। কখনো বলছে, খুনি ভারতে পালিয়ে গেছে, আবার কখনো বলছে, দেশেই রয়েছে। এটা পরিষ্কার, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম কীভাবে পরিচালিত হচ্ছে বা তাদের সক্ষমতা কোথায়, সে বিষয়েও প্রশ্ন উঠছে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, ইনকিলাব মঞ্চ বারবার তথ্য দিয়ে সরকারের সহযোগিতা করেছে। আমাদের না থাকলে হয়তো খুনির সনাক্ত সম্ভব হতো না। তাই, এই গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।জাবের আরও বলেন, আমাদের দ্বিতীয় দাবির মুখ্য বিষয় ছিল—সিভিল ও মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে থাকা দোসরদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা। এ বিষয়ে সরকারের কোনো উদ্যোগ দেখছি না। দেশের কোটি কোটি মানুষের দাবিকে উপেক্ষা করা এখন খুবই দায়িত্বহীনতা। তিনি জানান, এই সরকার দেশের স্বার্থে কাজ করছে না, বরং ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তিনি প্রশ্ন করেন, আইনি সহায়তাকারীরা কি দায়িত্ব এড়ানোর জন্য দায়িত্ব পালন করছেন? এই সরকারের প্রত্যাশা সাধারণ মানুষের ভোটের ভিত্তিতে নয়, বরং সত্যিকার বিচার মুক্তির জন্য। ড. ইউনূসকেও তিনি সতর্ক করে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দেখছে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডে আপনার নীরবতা হতাশাজনক। বিচার ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই—অন্যথায় ভবিষ্যতে আরও মারাত্মক পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, আর রক্ত ঝড়াতে চান না, তবে যদি বিচার না হয়, তাহলে পুরো দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। দ্রুত সব খুনির অবৈধ অবস্থান শনাক্ত করে আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা আবশ্যক। এই গণআন্দোলনের মাধ্যমে আমরা সত্যের সন্ধানে আছি। আমাদের দাবি, হত্যার ন্যায্য বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

