দিন যতই avanzাচ্ছে, উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা অব্যাহত রয়েছে। দিনের বেলায় তাপমাত্রা কিছুটা উষ্ণ হলেও সন্ধ্যা নামতেই শুরু হয় গভীর শীত, যা রাতের দিকে ঘন কুয়াশা আর হিমশীতল বাতাসের মাধ্যমে আরও প্রকট হয়ে উঠে। গত পাঁচ দিন ধরে এ জেলায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে সড়কে যানবাহনের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, হেডলাইট জ্বালিয়ে চালকরা নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। জেলায় বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাফেরার সময় দেখা গেছে, শীতের কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। ভোরে কুয়াশার কারণে সড়ক ও নৌপথে চলাচলে নানা রকম বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। শীতের কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর, খেটে খাওয়া মানুষ ও নিম্নআয়ের পরিবারগুলো। অনেকের প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে এবং কিছু মানুষ কাজের জন্য বের হতে পারছেন না।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন অঞ্চলে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্রের চাহিদা বেড়েছে, তবে এখনো পর্যাপ্ত সহায়তা পৌঁছায়নি।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের রিকশাচালক আলম মিয়া (৫০) বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে খুব ঠাণ্ডা পড়ছে। ঘরে থেকে বের হওয়া যায় না। আমাদের তো বের হতে হয় কারণ স্ত্রী ও সন্তানের জন্য কিছু কি খাওয়াব। এখনো একটাও ভাড়া পাইনি। রাস্তার মানুষ এখন নেই, ভাড়া কেমনে করব? তাই বসে আছি। বাজারে যাওয়ার উপায় নেই, ছেলেমেয়েদের খাওয়াও চালানো কঠিন।’
অন্যদিকে, চিলমারী উপজেলার ব্রহ্মপুত্র পাড়ের মমিন মিয়া জানান, ‘আমরা নদী পাড়ের মানুষ। প্রতি বছর গরম কাপড়ের অভাবে ঠাণ্ডায় ভুগি। এ বছরও ঠাণ্ডা অনেক বেড়ে গেছে। এখনই থাকাটা কঠিন, আরও ঠান্ডা বাড়লে পরিবার নিয়ে বিপদে পড়ব।’
রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েকদিন শীত ও কুয়াশার প্রবণতা অব্যাহত থাকবে, এবং মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।’

