খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠক ও বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক মোতালেব শিকদার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে তার প্রেমিকা তনিমা ওরফে তন্বীকে আটক করেছে। ঘটনা ঘটে সোমবার (২২ ডিসেম্বর) রাতেই নগরীর সদর থানার আশপাশের এলাকা থেকে। খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করে।
পূর্বে জানা যায়, সকাল ১১টার দিকে খুলনা নগরীর গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে আল আকসা মসজিদ সড়কের মুক্তা হাউজে গুলিবিদ্ধ হন মোতালেব। জানা গেছে, ১ নভেম্বর তিনি ওই ভবনের একটি কক্ষে ভাড়া নেন, যেখানে এই ঘটনা ঘটে।
খুলনা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) তাজুল ইসলাম জানান, মোতালেব রবিবার রাত থেকে ওই কক্ষে অবস্থান করছিলেন। সকাল ১১টার আগে তার গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা তার কাছ থেকে বের হন। ধারণা করা হচ্ছে, তাকে গুলিবিদ্ধ করা হয় তার পরিচিত কারো মাধ্যমে। ঘটনার পর থেকে তনিমা পালিয়ে গেছেন, কিন্তু পুলিশ ওই বাসা থেকে একটি গুলির খোসা, পাঁচটি মদের বোতল, ইয়াবা এবং ইয়াবার সেবনের উপকরণ উদ্ধার করেছে।
অভিযুক্ত তনিবি ভিন্ন একটি নারীর পরিচয় দিয়ে নিজেকে এনজিও কর্মী দাবি করেছিলেন এবং স্বামী-স্ত্রী হিসেবে থাকার কথা বলেছিলেন। তবে, ভাড়া নেওয়ার পরে তার কাছে অচেনা পুরুষের আসা-যাওয়ার বিষয়টি সন্দেহের সৃষ্টি করে। পুলিশ গত ১ ডিসেম্বর তাদের বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দেয়। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সে পক্ষের চলে যাওয়ার কথা ছিল। এই নারীর কক্ষে গুলির ঘটনা ঘটে।
পুলিশি তদন্তে জানা যায়, গাজী মেডিকেল কলেজের পাশের একটি ফার্মেসি থেকে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়, যেখানে দেখা যায়, রবিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে মোতালেব ও তার সহযোগীরা একটি গাড়ি থেকে নেমে ‘মুক্তা হাউস’ নামে ওই বাসার দিকে যাচ্ছেন। সোমবার সকাল ১০:৫৯ মিনিটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।
এমনকি, এক মাস আগে তন্বী নামে এক নারী সোনাডাঙ্গা এলাকার আল আকসা মসজিদ গলির ওই বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। সেখানেই তার স্বামীসহ অনেকের আনাগোনা ছিল। বিভিন্ন সময় মোতালেব ওই বাসায় আসতেন। রবিবার রাতে মোতালেবসহ কয়েকজন প্রবেশের পর সকালে তাদের মধ্যে বিবাদের জেরে তাকে গুলি করা হয়। বাসার বিভিন্ন অংশে রক্তের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
এছাড়াও, পুলিশ ওই বাসা থেকে গুলির খোসা, ইয়াবা, বিভিন্ন সরঞ্জাম এবং বিদেশি মদের বোতলও উদ্ধার করেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এই ঘটনায় জড়িত রয়েছে একাধিক ব্যক্তি, এবং ঘটনাটি ব্যক্তিগত শত্রুতা বা অন্য কোন কারণেও হতে পারে।
স্থানীয় ও পুলিশি সূত্র জানায়, এই ঘটনায় তদন্ত চলছে, এবং সন্দেহভাজনদের খুঁজে বের করতেই জোরদার অভিযান চালানো হচ্ছে।

