বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) ৬১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর, দেশের সবুজ ভুবনে উৎসাহ ও আনন্দের মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হচ্ছে। এ দিনটি উপলক্ষে পুরো দিন জুড়ে বিটিভির পর্দায় বিরাজ করছে নানা রঙে রঙিন অনুষ্ঠান।
উৎসবের অংশ হিসেবে বিটিভি আয়োজিত হয়েছে বিশেষ অনুষ্ঠান, যেখানে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং তারকারা শুভেচ্ছা বার্তা পাঠাচ্ছেন। এর পাশাপাশি দেখা যাবে বিটিভির দীর্ঘ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তসমূহ নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘ডিআইটি থেকে রামপুরা’।
প্রাচীন দিনের ঐতিহ্য ও আধুনিক যুগের সংযোগে বিটিভির আর্কাইভ থেকে প্রচারিত হবে জনপ্রিয় শিল্পীদের গাওয়া জনপ্রিয় গান ও নাটক। এ দিনটি উদযাপন করতে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র থেকেও বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারিত হচ্ছে।
পূর্বসূরিদের মেলায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের স্টুডিও ও প্রাঙ্গণে থাকছে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। সেখানে বিটিভির নিজস্ব শিল্পী, কলাকুশলী, দেশের অন্যান্য জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করবেন। অতিথিরা বিটিভি নিয়ে বিভিন্ন স্মৃতিচারণal করবেন।
দিনব্যাপী এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার শুরু হবে সকাল ৮টায় থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। এছাড়াও, রাত ১১টায় বিটিভি স্টুডিও থেকে সরাসরি সম্প্রচারের মাধ্যমে গানের মনোমুগ্ধকর অনুষ্ঠান ‘সুর সাগর’ দেখানো হবে।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক মোঃ মাহবুবুল আলম শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন কেবলমাত্র একটি সম্প্রচারমাধ্যম নয়, এটি দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও মানুষের আবেগের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। বিটিভি ৬১ বছরে জাতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী ও অংশীদার হয়ে আছে। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং মানসম্পন্ন অনুষ্ঠান নির্মাণের মাধ্যমে ভবিষ্যতেও জনগণের আস্থা ও ভালোবাসার প্রতিষ্ঠান হিসেবে থাকবে। দেশের সকল শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন আমাদের এই সোনালী প্রতিষ্ঠানের জন্য।’
উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর ঢাকা শহরের তৎকালীন ডিআইটি ভবনের নিচতলায় বাংলাদেশের প্রথম টেলিভিশন সম্প্রচার শুরু হয়। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে এটি একটি রাষ্ট্রিয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে নতুনভাবে কার্যক্রম শুরু করে।
১৯৭৫ সালে ডিআইটি ভবন থেকে রামপুরার নিজস্ব ভবনে স্থানান্তরিত হয়। ১৯৮০ সালে রঙিন সম্প্রচারে প্রবেশ করে বিটিভি, যা টেলিভিশন দর্শকদের জন্য নতুন দিগন্তের সূচনা করে। বর্তমানে এটি এইচডি ফরম্যাটে টেরিস্ট্রিয়াল, স্যাটেলাইট, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দর্শকের কাছে অনুষ্ঠান পৌঁছে দিচ্ছে। আজকের যুগে বিটিভি আধুনিক প্রযুক্তি ও মানসম্পন্ন সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দেশের অন্যতম প্রিয় মাধ্যম হিসেবে অবস্থান শক্তিশালী করে চলেছে।

