সালমান খানের জনপ্রিয়তা তখনও শুধু সিনেমার হিট-ফ্লপের সংখ্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর প্রকৃত শক্তি হলো দর্শকদের সঙ্গে জন্মানো গভীর সম্পর্ক, যা সময়ের পর সময় ধরে আরও শক্তিশালী হয়েছে। ‘ম্যানে প্যায়ার কিয়া’ এ প্রেমিক থেকে শুরু করে ‘ওয়ান্টেড’, ‘দাবাং’, ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ — সব চরিত্রে তিনি কেবল অভিনয় করেননি, বরং প্রজন্মের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।
প্রায় বিশ বছর ধরে বলিউডের ভাইজান আজ জীবনের বিশেষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন। ২৭ ডিসেম্বর তাঁর ৬০তম জন্মদিন উপলক্ষে মুম্বাই শহর জুড়ে ছিল উৎসবের আমেজ। বলিউডের তারকা, ক্রীড়া জগতের পরিচিত মুখরা একত্রিত হয়েছিলেন এই খুশির দিনে উচ্ছ্বাস শেয়ার করতে।
প্রতিবারের মতোই এই বছরও সালমানের জন্মদিন ছিল বড় আকারের উৎসবের মধ্য দিয়ে। সালমান নিজে আগেই জানিয়েছেন, বছরের বিভিন্ন পারিবারিক খুশির মুহূর্তের পর এই দিনটি হয়ে ওঠে আনন্দের শেষপর্ব। এই বছর জন্মদিনের উদযাপন শুরু হয়েছিল শুক্রবার রাত থেকেই, আর সবথেকে বেশি আলো ঝলমলে হয়ে উঠেছিল বান্দ্রা ওরলি সি লিংকে। আলোর ঝলকানি ও বিশেষ শৈল্পিক সাজসজ্জায় সজ্জিত ছিল সেই এলাকা, যেখানে ছিল তাঁর ছবি ও ‘হ্যাপি বার্থডে ভাই’ লেখার ব্যানার।
মূল অনুষ্ঠানের জন্য তিনি চলে যান পানভেলের ফার্মহাউসে। সেখানে পরিবারের সদস্য ও কাছের বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে আয়োজন হয় এক সরল ও ঘরোয়া পার্টির। তবে পাপারাজ্জিরা তাঁদের কিছুটা অসুবিধা না দিয়েই বাইরে এসে সালমানের সঙ্গে কেক কেটে জন্মদিন উদযাপন করেন।
বিশেষ এই দিনটির জন্য তিনি বদলে ফেলেছিলেন তাঁর সাধারণ লুক, যা দেখা গেল শুক্রবার রাতে। তিনি পরেছিলেন কালো টি-শার্ট, নীল ডেনিম এবং হাতে ছিল তাঁর ট্রেডমার্ক ব্রেসলেট। সাধারণ এই পোশাকই ছিল তাঁর স্টাইলের অন্যতম চিহ্ন।
জন্মদিনের অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন অনেক জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। ভারতের সাবেক ক্রিকেট অলরাউন্ডার মহেন্দ্র সিং ধোনি স্ত্রী সাক্ষী ও কন্যা জিভাকে সঙ্গে নিয়ে দেখা গেল এই উৎসবে। সালমানের সঙ্গে দেখা গেল টাবুকে, যিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে এই খুশির দিনে উপস্থিত হয়েছিলেন। এছাড়াও ছিলেন রণদীপ হুদা, আদিত্য রায় কাপুর, রাকুল প্রীত সিং, হুমা কুরেশিসহ আরও অনেক বলিউড তারকা, যারা সালমানকে শুভকামনা জানায়।
মুম্বাই সহ ভারতের বিভিন্ন অংশে ভক্তরা উৎসব করে তাদের প্রিয় নায়কের জন্মদিন।
সালমান খান ১৯৬৫ সালে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোরে জন্মগ্রহণ করেন। তবে বেড়ে ওঠা মুম্বাইয়ে, যেখানে তার বাবা সেলিম খান — একজন স্বনামধন্য স্ক্রিপ্ট রাইটার। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন যে পরিবারই তার সবচেয়ে বড় ভরসা। প্রতিটি সমস্যা বা সংকটের সময় পরিবারই তার পাশে ছিল।
সালমানের বলিউডে অভিষেক হয় ১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ ছবির মাধ্যমে। এরপর তিনি ঝড় তুলেছিলেন ১৯৮৯ সালের ‘ম্যায়নে প্যায়ার קিয়া’ সিনেমার মাধ্যমে। তার ক্যারিয়ার দ্রুত পাল্টে যায়, বিশেষ করে ‘তেরে নাম’ সিনেমার পর থেকে। এই সফলতার মাধ্যমে তিনি হয়ে উঠেছেন বলিউডের ভাইজান, যার আবেগ, ব্যক্তিত্ব এবং অভিনয় দক্ষতা সবাইকে মুগ্ধ করে চলেছে।
সূত্র: দ্য ওয়াল, নিউজ ১৮, আজকের খবর/আত্ম।

