লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্র এবং বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের করা মামলা খারিজ করে দিয়েছে যুক্তরাজ্য হাইকোর্ট। একই সঙ্গে বিবাদীদের মামলার আইনি খরচ দেয়ার জন্য শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যুক্তরাজ্য হাইকোর্টের কিংবেঞ্চ গত ২ অক্টোবর এক রায়ে এ আদেশ দেন। গতকাল বিবাদীদের আইনজীবীর পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি অবহিত করা হয়।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিচারকের আসনে বসে রাজনৈকি কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিল যুক্তরাজ্য বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তারিত তুলে ধরে বিচারপতিদের জন্য নির্ধারিত আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলা হয়। সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে শামসুদ্দিন চৌধুরীকে কালো মানিক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছিল। সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্য যুক্তরাজ্য থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়। এতে শামসুদ্দিন চৌধুরী সংক্ষুব্ধ হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন। মানহানির জন্য তিনি ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের করা মামলায় বিবাদীদের মধ্যে ছিলেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আবদুস সালাম, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক এমএ মালেক, সাপ্তাহিক বাংলাদেশের সম্পাদক, পরিচালকসহ ৫ জন, সাপ্তাহিক সুরমার সম্পাদক পরিচালকসহ ৫ জন, লন্ডন বাংলার সম্পাদক পরিচালকসহ ৯ জন, নতুন বার্তার সম্পাদক পরিচালকসহ ১০ জন এবং সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক।
তারা মামলাটি আইনগত মোকাবিলা করেন। আদালত শামসুদ্দিন চৌধুরীর করা মামলা খারিজ করে দিলে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। সর্বশেষ উচ্চ আদালতে গত ২ অক্টোবর এর চূড়ান্ত রায় হয়। এ রায়ের পর আর কোনো আপিলের সুযোগ নেই। এতে মামলার বিবাদীরা চূড়ান্তভাবে বিজয়ী হয়েছেন। একই সঙ্গে শামসুদ্দিন চৌধুরীকে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বিবাদীদের মামলা পরিচালনার খরচ পরিশোধ করার জন্য।
ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী বিবাদীদের মামলার খরচ পরিশোধে অপরাগ হলে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ অথবা সম্পত্তি জব্দ বিধান রয়েছে।
গতকাল পূর্ব লন্ডনের একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ ইনাম এইচ চৌধুরী। বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিবাদীদের আইনজীবী সুজান আলসান। বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরীর আইনজীবী কেনডি এলএলপির পক্ষ থেকেও একজন প্রতিনিধি জিরাল্ড ও মাহিনী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিবাদী ব্যারিস্টার আবদুস সালাম, এম এ মালেক, প্রবীণ সাংবাদিক আবু তাহের চৌধুরীসহ বিবাদী সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।