নিখুঁতভাবে খেলা পরিচালনা করা, খেলোয়াড়দের রক্ষা করা ও বিশ্বকাপের সুনাম ধরে রাখার জন্য এবার নতুন আঙ্গিকে সাজানো হয়েছে ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা রেফারিদের। রাশিয়ায় ফুটবল বিশ্বকাপে ৪৬টি দেশের রেফারিরা ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন।
বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ৩৬জন রেফারি, ৬৩ জন সহকারী রেফারির পাশাপাশি এই প্রথম থাকছে ১৩ জন ভিডিও রেফারি। ফিফার রেফারিজ কমিটিই রেফারি বাছাই ও সংখ্যা নির্ধারণ করেছে।
এর আগে বিশ্বকাপে রেফারি ও সহকারী রেফারিরা নিজেদের দায়িত্ব সামলেছেন। এবার তাদের আরও নিখুঁতভাবে ম্যাচ পরিচালনার জন্য সাহায্য করবেন ভিডিও রেফারিরা। ২১তম বিশ্বকাপে নতুন সংযোজন হয়েছে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি (ভিএআর)।
১৩ জন ভিডিও সহকারী রেফারির কাজ হবে অন-ফিল্ড রেফারিদের বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে আরও নিখুঁত করা। মাঠের রেফারি কোনো বিষয় নিয়ে সন্দিহান থাকলে তা পরিষ্কার হওয়ার জন্য ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সাহায্য নেবেন। বিশেষ করে গোল, পেনাল্টি ও ফাউলের বিষয়গুলোকে নিখুঁত করার জন্যই ব্যবহার করা হবে ভিএআর। বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্যাচেই তিনজন করে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি কাজ করবেন। তবে, তারা বিশ্বকাপের ম্যাচে মূল খেলা পরিচালনা করতে পারবেন না। পারবেন না সহকারী রেফারি হতেও।
গত তিন বছর ধরে রেফারি, সহকারী রেফারি ও ভিডিও সহকারী রেফারিদের নিয়ে বিভিন্ন ধরণের সেমিনার করেছে ফিফা। যে ক্রাইটেরিয়ার ভিত্তিতে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি নিয়োগ করা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে তাদের অভিজ্ঞতা, বিভিন্ন ফেডারেশন কিংবা কনফেডারেশনের হয়ে ম্যাচ অফিসিয়াল হিসেবে ভিডিও নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা। একই সঙ্গে ফিফা কর্তৃক আয়োজিত নানা কর্মশাল এবং কর্মকাণ্ডে যারা অধিকতর অংশগ্রহণ এবং দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে, তাদের মধ্য থেকেই বাছাই করা হয়েছে এই ১৩ জন রেফারিকে।
সফল পরীক্ষা শেষে এবার রাশিয়া বিশ্বকাপের ম্যাচগুলোতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফিফা। ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো জানিয়েছেন, ‘আমাদেরকে সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে হবে। আমরা রেফারিদেরকে এমন সব প্রযুক্তি দিতে চেয়েছি, যার মাধ্যমে তারা আরও নিখুঁত সিদ্ধান্ত নিতে পারবে। আর বিশ্বকাপে কিছু সিদ্ধান্ত ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপে এই পদ্ধতি চালু করা নিয়ে আমি নিজেই দোলাচলে ছিলাম। কিন্তু পরীক্ষা করার আগে আপনি এর মূল্য বুঝবেন না। আমরা দেখেছি, ভিএআর ছাড়া, প্রতি তিন ম্যাচে রেফারি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুল করে বসেন। পরীক্ষা চালিয়ে আমরা যেই ফলাফল দেখতে পেয়েছি, সেই হিসাবে, ভিএআর চালু থাকলে গড়ে প্রতি ১৯ ম্যাচে রেফারি একটি বড় ভুল করেন।’
২০১৬ সালের ডিসেম্বরে ক্লাব বিশ্বকাপে ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বা ভিএআর প্রথমবারের মতো ব্যবহৃত হয়। ২০১৭ সালের কনফেডারেশন্স কাপেও এই প্রযুক্তি-নির্ভর পদ্ধতি পরখ করে দেখা হয়।