বিশ্বকাপে জয় দিয়ে শুরু করল ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু অগণিত সুযোগ নষ্ট করার আক্ষেপ ঠিকই থেকে গেল তাদের মনে। শনিবার আত্মঘাতী গোলের পর সফল পেনাল্টিতে ২-০ গোলে নাইজেরিয়াকে হারাল ক্রোয়েটরা।
প্রথম সুযোগটা তৈরি করেছিল নাইজেরিয়া। ১২ মিনিটে লুকা মদরিচের ভুলে কর্নার প্রান্ত থেকে বল পান নাইজেরিয়ার মিকেল। যদিও তার ক্রস সোজা চলে যায় ক্রোয়েট গোলরক্ষক সুবাসিচের হাতে। পরের মিনিটে একটুর জন্য গোলমুখ খুলতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। মদরিচ বল দেন মানজুকিচকে, তার বাড়িয়ে দেওয়া বলে লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি পেরিসিচ। গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায় বল।
আন্তে রেবিচকে গোলের সুযোগ তৈরি করে দিয়েছিলেন মানজুকিচ। কিন্তু গোলবারের পাশ দিয়ে সেই চেষ্টা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
এমন দুটি সুযোগ নষ্ট করার আক্ষেপে যখন পুড়ছিল ক্রোয়েশিয়া, তখনই আত্মঘাতী গোলে তাদের আনন্দে ভাসান এতেবো। ৩২ মিনিটে মদরিচের কর্নার থেকে ডিবক্সের মধ্যে পেরিসিচের হেড পাস থেকে মানজুকিচ হেড করলে ওঘেনেকারো এতেবোর পায়ে লেগে বল জড়ায় জালে। নাইজেরিয়া বিশ্বকাপে আগের গোলটিও হজম করেছিল আত্মঘাতী থেকে। ২০১৪ সালে শেষ ষোলোতে ফ্রান্সের কাছে হারের ম্যাচে ডিফেন্ডার জোসেফ ইয়োবো নিজেদের জালে বল পাঠান।
বিরতিতে যাওয়ার আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করার বেশ কাছে ছিল ক্রোয়েটরা। ক্রামারিচের দুর্ভাগ্য যে ৩৯ মিনিটে দ্বিতীয় গোল করতে পারেননি। রাকিতিচের ক্রসে হেড করেছিলেন তিনি। কিন্তু বল গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। তিন মিনিট পর মানজুকিচের কাছ থেকে বল পেয়েও গোলবারের পাশ দিয়ে মারেন ভ্রাসলিকো। বিরতির ঠিক আগে নাইজেরিয়াকে সমতায় ফেরানোর পরিষ্কার সুযোগ পান আইয়োবি। দেজান লভরেন দারুণ দক্ষতায় তাকে আটকে দিয়ে প্রথমার্ধে ক্রোয়েশিয়ার স্কোর ১-০ তে থাকা নিশ্চিত করেন।
৫৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করার বিশাল সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। পেরিসিচের ক্রস থেকে নাইজেরিয়ার ডিবক্সে বল পান রেবিচ। ৬ গজ দূর থেকে নেওয়া তার শট গোলবারের ওপর দিয়ে চলে যায়।
অসহায় নাইজেরিয়া দ্বিতীয়ার্ধে সুবাসিচের পরীক্ষা নেয় ৫৯ মিনিটে। কিন্তু ইঘালোর হেড প্রতিপক্ষকে ভড়কে দিতে যথেষ্ট ছিল না। অবশেষে জয় নিশ্চিত করার সুযোগ আসে ক্রোয়েটদের। উইলিয়াম ট্রুস্ট-একং তাদের ডিবক্সে লাফিয়ে ওঠা মানজুকিচকে টেনে মাটিতে ফেলেন। নিঃসঙ্কোচে পেনাল্টি দেন রেফারি। ৬৯ মিনিটের ওই পেনাল্টি থেকে গোল করার দায়িত্ব কাঁধে নেন মদরিচ। ক্রোয়েট অধিনায়ক প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে ভুল দিকে পরিচালিত করে বিশ্বকাপে নিজের প্রথম গোল করেন। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে বিশ্বকাপে পেনাল্টি থেকে দ্বিতীয় গোল করা খেলোয়াড় হলেন মদরিচ। ১৯৯৮ সালে রোমানিয়ার বিপক্ষে ডেভর সুকার পেনাল্টি থেকে গোল করেন। দুজনের মধ্যে আরেকটি মিল আছে, তারা দুজনই রিয়াল মাদ্রিদের।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর আর ঘুরে দাঁড়ানোর মতো পারফরম্যান্স করতে পারেনি নাইজেরিয়া। আগামী বৃহস্পতিবার আর্জেন্টিনাকে লড়বে ক্রোয়েশিয়া। আর আইসল্যান্ডের বিপক্ষে খেলবে নাইজেরিয়া।