ভূমধ্যসাগরের লিবীয় উপকূল থেকে গত সপ্তাহে উদ্ধার হওয়া ৬২৯ অভিবাসন প্রত্যাশীর একটি অংশ স্পেনের বন্দরে প্রবেশ করেছে। রবিবার (১৭ জুন) বাকি অংশটিরও স্পেনে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। ইতালি ও মাল্টা সরকার ওই অভিবাসীদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানানোর পর স্প্যানিশ সরকার তাদের জন্য দুয়ার খুলে দেয়। উদ্ধার হওয়া ওই অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ারও ঘোষণা দিয়েছে দেশটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ওই অভিবাসীদের বহনকারী তিনটি জাহাজের একটি এরইমধ্যে ভ্যালেন্সিয়া বন্দরে পৌঁছেছে।
গত সপ্তাহে ভূমধ্যসাগরের লিবিয়া উপকূল থেকে ৬২৯ অভিবাসীকে উদ্ধার করার পর তাদেরকে অ্যাকুরিয়াস নামের একটি জাহাজে তুলে দেওয়া হয়। উদ্ধার তৎপরতায় ইতালির নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ডও অংশ নিয়েছিল। উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের নিয়ে ইতালির বন্দরে নোঙর করতে চাওয়া জাহাজটিকে ভূমধ্যসাগরেই স্থির থাকার নির্দেশ দেয় দেশটির ‘মেরিটাইম রেসকিউ কো-অর্ডিনেশন সেন্টার’। এর আগে মাল্টাও ওই অভিবাসীদের গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। ওই জাহাজে থাকা মানুষেরা বেশিরভাগই সাব-সাহারান এলাকার বাসিন্দা। উদ্ধারকৃতদের ১২৩ জন এমন শিশু যাদের সঙ্গে কোনও অভিভাবক নেই। ১১ জন খুবই ছোট শিশু ও ৭ জন গর্ভবতী নারী রয়েছেন ওই জাহাজে। শিশুগুলোর বেশিরভাগই ইরিত্রিয়া, ঘানা, নাইজেরিয়া ও সুদানের বাসিন্দা।
এ সপ্তাহের প্রথমদিকে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো স্যানশেজ বলেন, ‘মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে সহায়তা করাটা আমাদের দায়িত্ব। মানবাধিকারের প্রতি আমাদের দায়বোধ থেকে এসব মানুষের নিরাপদ প্রবেশের জন্য আমরা একটি বন্দর খুলে দিচ্ছি।’ রবিবার (১৭ জুন) ভোর ৬টা ২০ মিনিটের দিকে অভিবাসীদের বহনকারী ইতালীয় কোস্ট গার্ডের জাহাজটি বন্দরে প্রবেশ করে। ইতালীয় সংবাদমাদ্যম আনসাকে উদ্ধৃত করে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই জাহাজে ২৭৪ জন আরোহী আছেন। অভিবাসন প্রত্যাশীদের সহায়তার জন্য স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও দোভাষীদের প্রস্তুত রেখেছে স্পেন। রেড ক্রসের কর্মীরাও অভিবাসীদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। উদ্ধার হওয়া বাকি অভিবাসীদের নিয়ে রবিবার আরও দুইটি জাহাজ স্পেনের বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
দুই সপ্তাহ আগে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন পেদ্রো। ক্ষমতায় আসার পরপরই অভিবাসন-বান্ধব অবস্থান দেখাচ্ছেন তিনি।