নিরঙ্কুশ বিজয়ের পথে থাকলেও বিজয় র্যালি বা আনন্দ মিছিল করবে না আওয়ামী লীগ। এমনকি দলটির পক্ষ থেকে নির্বাচনে বিজয় নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস প্রকাশও থাকবে না। দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতাকর্মীদের বিজয়োল্লাস না করার নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার (৩০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়। এ নির্বাচনে বড় ধরনের বিজয়ের পথে রয়েছে আওয়ামী লীগ।
এইচ টি ইমাম দলটির শীর্ষ নেতাদের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এখন আনন্দ মিছিল করার সময় নয়। দেশের জন্য কাজ করার সময়। কাজেই কোনও জায়গায় কোনোভাবে কেউ কোনও আনন্দ মিছিল বের করবেন না।’
এদিকে দলীয় শীর্ষ পর্যায়ে খোঁজ-খবর নিয়েও শেখ হাসিনার এমন মনোভাবের কথা জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী মনে করছেন, এখন সবাই মিলে একযোগে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার সময়। দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ থেকে পর্যায়ক্রমে উন্নত দেশের পথে নিয়ে যেতে কর্মকৌশল প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়ন করার বিকল্প নেই। তাই যত দ্রুত সম্ভব একটি শক্তিশালী ও কার্যকর ক্যাবিনেট গঠন করে কাজে নেমে পড়ার অপেক্ষায় তিনি।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান জাগো বাংলা ২৪ ডট কমকে বলেন, ‘জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বেও প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে নৌকাকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে জয়ী করেছে। আওয়ামী লীগ সেই জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করবে। দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে কাজ করবে। আওয়ামী লীগ আনন্দ র্যালি বা উৎসব নয়, জনগণের দেওয়া দায়িত্ব পালন করার জন্য পূর্ণোদ্যমে কাজ করবে।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, বিজয় উৎসব করতে গিয়ে অনেক সময় বাড়াবাড়ির আশঙ্কা থাকে। প্রধানমন্ত্রী চান না আনন্দের মাত্রা ছাড়িয়ে যাক। কোথাও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক। কোথাও কোনও ধরনের সংঘাত হোক। সেজন্যই বিজয়োৎসব করার পক্ষপাতী নন তিনি।
সূত্রমতে, প্রত্যাশিত জয়ের পথে থাকলেও আওয়ামী লীগ সভাপতির মন খারাপ। এ নির্বাচনে দলের অনেক নেতাকর্মী হতাহত হয়েছেন। অনেকে নানাভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন। তাদের কথা ভাবছেন তিনি। এসব নেতাকর্মীর অবদান, তাদের স্বজন ও পরিজনদের কথা ভেবে শেখ হাসিনা আনন্দ উৎসব করতে চান না। বরং নেতাকর্মীদের এই ত্যাগকে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যবহার করতে চান, শোককে শক্তিতে রূপান্তর করতে চান।