জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশে ধর্ষণ মহামারি আকার ধারণ করেছে। তাই আর ৫ দল, ৭ দল ও ১০ দল নয়, সারাদেশে জনগণের ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমি আশার আলো দেখছি। নিরাশ হওয়ার কারণ নেই। কোনো দলীয় চিন্তাধারা থেকে বলছি না। আজ সব দলের মানুষকে ডেকেছি। আজকে সারাদেশের সব মানুষের ঐক্য চাই।
গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ সারাদেশে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
ধর্ষণ বৃদ্ধির জন্য আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার ব্যর্থতাকে দায়ী করে ড. কামাল হোসেন বলেন, যারা সরকার পরিচালনা করেন, তাদের প্রথম দায়িত্ব জানমাল ও নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেখানে যে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে, সেটা পত্রিকা খুললে প্রতিটি পাতায় পাওয়া যায়। আমরা চাই এটা বন্ধ হোক। না হলে জনগণকে সুযোগ দিন, যাতে তারা যোগ্য সরকার গঠন করতে পারে।
তিনি বলেন, সরকারের রাষ্ট্র পরিচালনায় ঘাটতি আছে। দেশে প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্র নেই। সংসদ আছে বলা হয়, সাংসদ আছেন বলা হয়; কিন্তু সেখানে এগুলো নিয়ে আলোচনা হয় না। সংসদীয় গণতন্ত্র থাকলে এমপিরা এসব নিয়ে কথা বলতেন।
ড. কামাল বলেন, আশার আলো দেখছি যে, মানুষ রুখে দাঁড়াচ্ছে। আজ প্রত্যেক মানুষের আকাঙ্ক্ষা- দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত, তাদের ছেলেমেয়ের ওপর কোনোরকম অত্যাচার যেন না হয়। আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম করি, যাতে দেশে কার্যকর গণতন্ত্র আসে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, বাংলাদেশে আছি নাকি আফ্রিকার জঙ্গলে বাস করছি, সে প্রশ্ন আজ সরকারের সামনে তুলে ধরতে চাই। এ দেশ কি সল্ফ্ভ্রমহানির রোল মডেল? সে প্রশ্ন সরকারকে করতে হবে এবং সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, মানুষের কাছে প্রশ্ন উঠেছে, যে ধর্ষণ করল তাকে গ্রেপ্তারের পর তার ছবি দেখে, চেহারা দেখে, সামনে দুইটা দাঁত নাই- এরকম একটা বিদ্ঘুটে অবস্থার লোক কি সত্যিই ধর্ষক? যারা ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের ভোট আগের রাতে করে ফেলতে পারে, তাদের দেওয়া সাক্ষ্য বিশ্বাস হয় না। কোনো জজ মিয়া নাটক দেখতে চাই না।
গণফোরামের মোশতাক আহমেদের পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, বিকল্পধারার একাংশের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ বক্তব্য দেন।