দেশের চলমান করোনা সংকট মোকাবিলায় জিডিপির ৩ ভাগ অর্থাৎ ৮৭ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা ঘোষণা করতে সরকারের কাছে প্রস্তাব রেখেছে বিএনপি। শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ প্রস্তাব দেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ইতোমধ্যে সরকার কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সেগুলো এই সংকট নিরসনে যথেষ্ট নয় বলে আমরা মনে করি। এজন্য জিডিপর ৩ শতাংশ অর্থাৎ ৮৭ কোটি টাকার প্যাকেজ প্রণোদনা ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’
বিশ্ব মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাস গোটা মানবজাতিকে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের ১৮০টি দেশে এই প্রাণঘাতী মহামারী ছড়িয়েছে। সরকারি সোর্স অনুযায়ী বাংলাদেশে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ৭০ জন। তন্মধ্যে মারা গেছে ৮ জন। বিশ্বের মহাশক্তিধর রাষ্ট্র থেকে শুরু করে পার্শ্ববর্তী ভারতেও কোথাও পূর্ণ বা আংশিক লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। দেরিতে হলেও বাংলাদেশেও প্রাথমিকভাবে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত এবং পরে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত আংশিক শাটডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ করোনার তৃতীয় স্তরে পৌঁছেছে। অর্থাৎ করোনা এখন কমিউনিটি পর্যায়ে সংক্রমিত হওয়া শুরু হয়েছে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদত্ত নীতিমালা অনুযায়ী সকলকে আরো সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খাদ্য উৎপাদন যাতে বন্ধ না হয়, সেজন্য বীজ, সার, কীটনাশক ও ভর্তুকীসহ ৫ হাজার কোটি টাকা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে কৃষকদের বিতরণ করতে হবে। পোল্ট্রিসহ সব কৃষি ঋণের কিস্তি ও সুদ মওকুফ করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া সব ক্ষুদ্র ঋণ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মওকুফ করতে হবে।
এছাড়া ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী এবং হাসপাতালসহ স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশফেরতদের সহযোগিতা দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যেসব প্রবাসী খালি হাতে দেশে ফিরেছেন, তাদের নূন্যতম ১৫ হাজার টাকা করে আপদকালীন আর্থিক সাপোর্ট দিতে হবে, যাতে তারা তাদের কর্মস্থলে ফিরতে পারেন। এজন্য এ খাতে এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে। স্বাস্থ্য খাতে সম্পৃক্ত হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিতে হবে। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকি বিবেচনায় বীমা করতে হবে।
বয়স্ক নারী, বিধবা, প্রতিবন্ধু, ষাটোর্ধ ব্যক্তিদের জন্য মাসে ৫ হাজার টাকা তিন মাস বিতরণ করতে এ খাতে আপাতত ২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন বিএনপি মহাসচিব।