দেশের শিল্প ‘দুর্ঘটনার’ বাঁক বদল করে দেওয়া আলোচিত তাজরীন ফ্যাশনস অগ্নিকাণ্ডের আট বছর আজ। ২০১২ সালের এই দিনে ভয়াবহ ঐ অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন শ্রমিক নিহত হন। আহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি। ঐ ঘটনায় প্রকৃত অপরাধী কে বা কারা তা আজও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিম্ন আদালতে ঐ মামলার বিচারকাজ এই দীর্ঘ সময়েও শেষ হয়নি।
সূত্র জানিয়েছে, এখনো তাজরীনের ঘটনায় করা মামলায় সব সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণও শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাজরীনের মালিক দেলোয়ার হোসেন ছয় মাস জেলে থাকার পর তিনি এখন জামিনে মুক্ত। সম্প্রতি তিনি রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন। তার স্ত্রী এবং প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মাহমুদা আক্তার মিতাও জামিনে রয়েছেন।
সাত বছরেও তাজরীনের বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। শ্রমিক নেতা ও জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। আদালত থেকেও তেমন চাপ নেই। এ ধরনের ক্ষেত্রে যে সহানুভূতিশীল হয়ে এগিয়ে যাওয়া দরকার, তা নেই। আমরাও (শ্রমিক অধিকার সংগঠনগুলো) যেভাবে লেগে থাকা দরকার, তা করতে পারিনি। যখন দিবস আসে তখন মনে হয়, অনেক কিছু করা দরকার। তিনি বলেন, ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে এখনো প্রশ্ন রয়ে গেছে। অন্যদিকে আহতদের যথাযথ চিকিত্সা ও পুনর্বাসন দরকার। তারা যাতে টিকে থাকতে পারে, এজন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন।
রানা প্লাজা ও তাজরীনে আহতদের চিকিত্সা ট্রাস্ট ফান্ড নামে বেসরকারিভাবে একটি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সূত্র জানায়, আহতদের মধ্যে ১৭২ জন এই ট্রাস্টে তালিকাভুক্ত বলে জানা গেছে। এর বাইরে আরো ৫০-এর অধিক ঐ ঘটনায় আহত হিসেবে তালিকাভুক্তির আবেদন করেছেন। তবে তহবিলের অভাবে পুরোদমে চিকিত্সাসেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
এদিকে তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ছয় বছর পূর্তি উপলক্ষে শ্রমিক সংগঠনগুলো সাভারের নিশ্চিন্তপুরে (অগ্নিকাণ্ডের স্থল) সমাবেশ ছাড়াও রাজধানীর প্রেসক্লাবে সমাবেশ, মানববন্ধন ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া জুরাইন কবরস্থানেও নিহত শ্রমিকদের স্মরণে দোয়া মাহফিল করা হবে।