স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণের সময় ও ব্যয় দুটোই বেড়েছে। শুরুতে এর নির্মাণ ব্যয় ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা ধরা হলেও সর্বশেষ তা তিন গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকায়। অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে ১০ হাজার ১৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্প একনেকে অনুমোদন পায়। শুরুতে পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়নের পর ২০১৩ সালে সেতু চালুর ঘোষণা থাকলেও পরবর্তী সময় নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগের পর ২০১৮ সালের মধ্যে চালুর সিদ্ধান্ত হয়। সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০২১ সালের ডিসেম্বরেও সেটি হচ্ছে না। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ২০২২ সালের এপ্রিলে পদ্মা সেতু জনসাধারণের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
জানা গেছে, ২০১১ সালে প্রথম প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধনের পর পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। ২০১৮ সালে এ প্রকল্পটি সংশোধন না করে ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। চলতি ২০২০ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর অগ্রগতি ৯১ ভাগ, নদী শাসন ৭৬ আর সার্বিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংক সরে দাঁড়ায় : ১৯৯৮ সালে যমুনা নদীতে বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর যাত্রা শুরু হলে পদ্মায় সেতু নির্মাণের দাবি প্রবল হয়। সেই দাবি থেকে কাজ শুরু হতে আরো এক দশক সময় লেগে যায়। এরপর এ প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে বিশ্বব্যাংক। এক পর্যায়ে সে অভিযোগ প্রমাণিত না হলে সংশ্লিষ্ট মামলা খারিজ হয়। তবে বিশ্বব্যাংকের অর্থ সহযোগিতা শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্বব্যাংক সরে দাঁড়ানোয় পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্বকে বিস্মিত করে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে। নানা মহলের সমালোচনা অগ্রাহ্য করে শেষ পর্যন্ত নিজের ঘোষণায় অটল ছিলেন শেখ হাসিনা। শেষ পর্যন্ত দেশের মানুষের টাকাতেই গড়ে উঠল দেশের ইতিহাসের বৃহত্তম এ অবকাঠামো।