চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরের জাদুতে সংগীতপ্রেমীদের মাতিয়ে রেখেছিলেন বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী এন্ড্রু কিশোর। বাংলাদেশের আধুনিক ও চলচ্চিত্রজগতের কালজয়ী অনেক গান তার কণ্ঠে সমৃদ্ধ হয়েছে। সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, প্রেম-বিরহ অনুভূতি সব ধরনের গানই তিনি গেয়েছেন। দীর্ঘদিন পুরোদস্তুর পেশাদার কণ্ঠশিল্পী হিসেবে দুই বাংলায় গান গেয়েছেন এন্ড্রু কিশোর। বাংলাদেশের এই প্লে-ব্যাক সম্রাটের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে আজ পারিবারিকভাবে প্রার্থনাসহ বিভিন্নভাবে স্মরণ করা হচ্ছে।
আজ বিকাল ৫টায় এন্ড্রু কিশোর স্মরণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে রাজশাহী প্রেস ক্লাব ও জননেতা আতাউর রহমান স্মৃতি পরিষদ। রাজশাহী প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাজশাহী প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবু প্রশান্ত কুমার সাহা।
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শারীরিক অসুস্থতার জন্য ২০১৯ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তাকে সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। সেখানে যাওয়ার পর ১৮ সেপ্টেম্বর এন্ড্রু কিশোরের শরীরে ক্যান্সার ধরা পড়ে।
টানা কয়েক মাস চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা হাল ছেড়ে দিলে ২০২০ সালের জুন মাসে এন্ড্রু কিশোরকে দেশে আনা হয়। ২০ জুন তাকে নেয়া হয় রাজশাহী নগরীর মহিষবাথানে বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাসায়। সেখানে ৬ জুলাই সন্ধ্যায় মারা যান তিনি। ১৫ জুলাই রাজশাহী সার্কিট হাউস সংলগ্ন এলাকায় খ্রিস্টানদের কবরস্থানে সমাহিত করা হয় এই শিল্পীকে।
সংগীত ক্যারিয়ারে শ্রেষ্ঠ গায়ক বিভাগে আটটি ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ জিতেছেন প্রয়াত এই গায়ক। এছাড়া দুটি ‘মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার’ ও তিনটি ‘বাচসাস’ পুরস্কারসহ এন্ড্রু কিশোরের ঝুলিতে আছে অসংখ্য নামিদামি সম্মাননা। তার মৃত্যু বাংলা সংগীতের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
মুলত সব অনুভূতির গানই তার কণ্ঠে পেয়েছে অনন্য মাত্রা। তার শত শত কালজয়ী গান এখনও মানুষের মুখে মুখে। এর মধ্যে ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস দম ফুরাইলে ঠুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কারে দেখাব মনের দুঃখ গো’ বা ‘তুমি আমার জীবন, আমি তোমার জীবন’ ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’ ‘এক জনমে ভালোবেসে ভরবে না মন, ভরবে না’সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান আজও তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।