ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক সাংবাদিক সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিদিনের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হওয়া হয়রানি, মামলার মধ্যে দিয়ে সাহস হারানোর পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই সমাবেশে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের জন্য এটি এক অশুভ সময়, যখন ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে মানহানি, অপপ্রচার এবং হয়রানির ঘটনা বেড়ে চলেছে।
নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ৭০ বছর বয়স্ক প্রবীণ সংবাদকর্মী আ. ফ. ম. কাউসার এমরান বলেন, আমাকে ফেসবুকে তিনটি পোস্টে জীবনের শিল্পনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, এরপর থেকে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে ভীতির কারণেই তিনি বাইরে কম বের হন ও মসজিদে যাওয়াও আতঙ্কে থাকেন। একই সঙ্গে, একজন তরুণ সাংবাদিক আল মামুন বলেন, নয়রে বেশ কিছু মামলার ভয় দেখানো হচ্ছে, ট্যাগ দিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি কখনও ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলাম না, কিন্তু আমাকে ছাত্রলীগের নেতা হিসেবে প্রচার করে হয়রানি করছে।
রবিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের আয়োজনে ওই সমাবেশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন সংগঠনের সাংবাদিক, নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করে। এতে জানানো হয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে ৮ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা, হত্যা চেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। এই মামলাগুলোর বেশিরভাগই বানানো এবং জাল olduğu অভিযোগ উঠছে।
উল্লেখ্য, বাঞ্ছারামপুরের প্রখ্যাত সাংবাদিক সজল আহমেদ, বদর উদ্দিন, বিশ্বজিৎ পাল, মহিউদ্দিন মিশু ও জহির রায়হানসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে পুলিশ যেগুলো অভিযোগ দাখিল করেছে, সেগুলোর সত্যতা নিয়ে বেশ ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে জাল মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে নিজেদের পেশাগত কাজে বাধা পেয়েছে অনেকেই।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এসব হয়রানি ও মামলা মূলত মিডিয়া কর্মীদের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য চালানো হচ্ছে। বক্তারা আরও দাবি করেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
জনপ্রিয় সাংবাদিকরা বলেন, স্বাধীনতার পর এটাই প্রথম এবার দেখলাম যে, পেশাদার সাংবাদিকেরা যেন এক ধরনের হতাশা ও উদ্বেগের মধ্যে আছেন। যারা ভুয়া পরিচয়ে আইনশৃঙ্খলার অপব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোরালো আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন জেলার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সম্পাদক, রিপোর্টার, চিত্র সাংবাদিকসহ অন্যান্যরা। তারা বলেন, যেকোনো পরিস্থিতিতেই সত্য সংবাদ পৌঁছানো এবং পেশাগত গৌরব Maintaining জরুরি। নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এই পরিস্থিতিতে একসঙ্গে পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে না।
বক্তারা শেষ করে বলেন, সাংবাদিকতা যেন অপপ্রচারের শিকার না হয়, সে জন্য সবাই একযোগে সোচ্চার হতে হবে। পাশাপাশি, নির্যাতন ও হয়রানি বন্ধের জন্য প্রশাসনের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। সমাবেশ শেষে সাংবাদিকরা এতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেন।