দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ফেরিয়ে ৩১ বিলিয়ন ডলারকে অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৭ আগস্ট বুধবার দিনের শেষে দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩১.৩৩ বিলিয়ন ডলারে। একই সময়ে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম–৬ অনুযায়ী রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২৬.৩১ বিলিয়ন ডলার।
এর আগে, ২৪ আগস্ট গ্রস রিজার্ভ ছিল ৩০.৮৬ বিলিয়ন ডলার এবং বিপিএম–৬ অনুযায়ী ছিল ২৫.৮৭ বিলিয়ন ডলার। তবে এই সব হিসাবের বাইরে আরও দুটি রিজার্ভের ক্যাটাগরি রয়েছে। একটি হলো বলিষ্ঠ বা ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ, যা স্বল্পমেয়াদী দায় বাদ দিয়ে নির্ধারিত হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্য হিসাবের মাঝে রয়েছে বলিষ্ঠ রিজার্ভের হিসাব, যেখানে আইএমএফের এসডিআর, ব্যাংকগুলোর বৈদেশিক মুদ্রা ক্লিয়ারিং হিসাবের ডলার, আর আকুর বিলের ডলার বাদ দিয়ে আসল করোনা রিজার্ভের পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, এই হিসাবে দেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ ২০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিমাণ দিয়ে প্রতি মাসে সাড়ে ৫ বিলিয়ন ডলার হিসেবে দেশের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব, যা মোট তিন মাসের বেশি। সাধারণত, একটি দেশের জন্য ন্যূনতম ৩ মাসের আমদানি খরচের সমান রিজার্ভ থাকা জরুরি।
২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ সর্বোচ্চ ছিল—প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি ডলার (৪৮ বিলিয়ন)। তখন, সার্বিক অর্থনৈতিক অচলাবস্থার কারণে আমদানি ব্যয় ও বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয় কমতে শুরু করে। ওই সময়ের বড় সংকটে পড়েছিল বৈদেশিক মুদ্রার সঞ্চয়, যখন ডলারের বিপরীতে টাকার দর কমে যায়। এর ফলে জ্বালানি ও আমদানি নির্ভর পণ্যের দাম বৃদ্ধি পায়। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি শুরু করে এবং ক্রমশ রিজার্ভের টান পড়ে।
অবশেষে, এই পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে বাংলাদেশ ২০২২ সালে আইএমএফ থেকে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ অনুরোধ করে। বর্তমানে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পুনরুদ্ধার এবং বৃদ্ধির ধারায় রয়েছে বলে জানা গেছে।