পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মিয় শেহবাজ শরীফের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছেন বাংলাদেশের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। এই বৈঠকটি ইসলামাবাদের প্রধানমন্ত্রী ভবনে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রি তার বিশেষ প্রতিনিধিদল ও ধর্ম উপদেষ্টাকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেন যে, এই সম্পর্ক ভবিষ্যতেও আরও শক্তিশালী ও বিস্তৃত হবে। সমস্যা ক্রান্তি সমাধানে আরও দৃষ্টান্তমূলক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের উন্নয়নে তিনি শক্তিপূর্ণ সচ্ছলতা দেখেন।
বৈঠকে শেহবাজ শরীফ উল্লেখ করেন, নবীন-নবীন আলোচনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার নিউইয়র্ক ও কায়রো সফরের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি ড. ইউনূসের দূরদর্শী নেতৃত্ব ও দারিদ্র্য বিমোচনে তার অবদানের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার আন্তরিক আগ্রহের প্রশংসাও করেন।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন একটি চিঠি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন, যেখানে বাংলাদেশের জনগণের প্রতি গভীর শোক ও সহানুভূতি প্রকাশ পেয়েছে। এই চিঠিতে লেখা হয়েছে, পাকিস্তানকেও বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জনগণের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে এবং নিহতদের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, এই কঠিন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জনগণ পাকিস্তানের ভ্রাতৃপ্রতিম জনগণের পাশে আছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন, পাকিস্তানের জনগণ ধৈর্য্য ও সহনশীলতার মাধ্যমে এই সংকট কাটিয়ে উঠবে এবং প্রয়োজনে বাংলাদেশ তাদের ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মসূচিতে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করবে।
আলোচনায় আরও দেখা যায় যে, ঢাকা ও করাচির মধ্যে সরাসরি বিমানের যোগাযোগ দ্রুত শুরুর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি, কৃষি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ধর্মতত্ত্ব ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী বিনিময় ও বৃত্তি প্রদান বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পাকিস্তানের ফেডারেল সরকার বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০০টি অনার্স থেকে পিএইচডি পর্যন্ত কোর্সে বৃত্তির ঘোষণা দিয়েছে।
সাক্ষাতে পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ, ধর্ম ও আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি মন্ত্রী সরদার ইউসুফ খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আতা তারার, পাকিস্তানের ঢাকায় অবস্থিত হাইকমিশনার মো. ইকবাল হোসেন খান, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ ও শরীফ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রভাষক মুফতি জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।