আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির মূল হোতা হিসেবে পরিচিত মোতাজ্জারুল ইসলাম মিঠুকে রাজধানীর গুলশান থেকে ঢাকার মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করেছে। ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-উত্তর) মোহাম্মদ রবিউল হোসেন ভূঁইয়া জানান, মিঠুর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা চলমান রয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে গুলশান থেকে তাকে আটক করে দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। আজকের মধ্যে তাকে দুদকে হস্তান্তর করা হবে।
অভিযোগ রয়েছে, দেশের স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এই ঠিকাদার। তার বিরুদ্ধে প্রায় ৭৬ কোটি টাকা অর্থসম্পদ অর্জনের অবৈধ অভিযোগে মামলার প্রস্তুতি চলছে। দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদন বলছে, মিঠু নিজ নামে বিভিন্ন কৃষিজমি, প্লট, ফ্ল্যাট ও বাড়ি ক্রয় করেছেন। এর সাথে তার যেসব কোম্পানির শেয়ার ও বিনিয়োগ রয়েছে, গাড়ি, ব্যাংক হিসাব ও স্বর্ণালংকারসহ আরও প্রায় ৫৭ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। সব মিলিয়ে তার মোট সম্পদের মূল্য প্রায় ৭৬ কোটি টাকা।
অতিরিক্ত, পারিবারিক ব্যয়সহ তার মোট সম্পদের হিসাব দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তবে, এই সম্পদ অর্জনের পেছনে বৈধ উৎস পাওয়া গেছে মাত্র ৭১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ, বৈধ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে প্রমাণিত হয়েছে ৭৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ। এই মামলার জন্য দুদকের আইন ২০০৪ এর ধারায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
বিশেষ করে, ২০১৬ সালে প্রকাশিত পানামা পেপারসে তার নাম উঠে আসে। অভিযোগ রয়েছে, তার মালিকানাধীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রক্রিয়া ও মালামাল সরবরাহে তিনি প্রভাবের অপব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেন।
এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তদন্ত এবং আইনি প্রক্রিয়া চলছে। মোতাজ্জারুল ইসলাম মিঠুর বিরুদ্ধে এই দুর্নীতির দুর্বার অভিযান দেশের অর্থমন্ত্রনালয় ও দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রমের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।