আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের আন্তঃমন্ত্রণালয় শর্তসাপেক্ষে ইলিশ মাছ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে রপ্তানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ এবং মাছ আমদানিকারকদের মধ্যে উৎসাহ দেখা দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে স্থানীয়ভাবে ইলিশ ধরা হলেও সীমিত পরিমাণে হওয়ায় রাজ্যের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। ফলে প্রতি বছর গুজরাট বা মিয়ানমার থেকে ইলিশ আমদানি চালু হয়। বিশেষ করে দুর্গাপূজা আসার আগে ইলিশের চাহিদা ব্যাপক বেড়ে যায়, যা পূরণে বাংলাদেশের থেকে ইলিশের রপ্তানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত এই সময় পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে বিশেষ অনুমতি চেয়ে থাকেন। এ বছরও বাংলাদেশ সরকার সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছে, তবে দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে কিছু শর্ত যোগ করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের নীতিগতভাবে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানি করার অনুমোদন দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ মানুষ এ খবর শুনেই খুশি, তারা বলছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ইলিশ আসছে, এটা খুবই ভালো খবর। আমরা ইলিশের অপেক্ষায় রয়েছি।’ একের পর এক ব্যবসায়ীরাও এই সিদ্ধান্তে অনুপ্রাণিত, যেমন পশ্চিমবঙ্গের ইলিশ আমদানিকারক সৈয়দ আনোয়ার মোকসেদ বলেন, ‘এটি দুই বাংলাকে আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে, আর সম্পর্ক আরও উন্নত হবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশ স্থানীয় চাহিদার কারণে কিছু সময়ের জন্য ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করেছিল। তবে ২০১৯ সাল থেকে দুর্গাপূজার আগে পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ পাঠানো আবার শুরু হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, ইলিশ রপ্তানিতে আগ্রহী প্রার্থীদের ১১ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার মধ্যে হার্ড কপিতে আবেদন করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে হালনাগাদকৃত ট্রেড লাইসেন্স, ইআরসি, আয়কর সার্টিফিকেট, ভ্যাট সার্টিফিকেট, বিক্রয় চুক্তিপত্র এবং মৎস্য অধিদপ্তরের অনুমতিপত্রসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট জমা দিতে হবে। প্রতি কেজি ইলিশের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১২.৫ মার্কিন ডলার।
এছাড়াও মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যারা আগ্রহী হয়েও আবেদন করেননি, তাদেরকে পুনরায় আবেদন করতে হবে। গত বছর দুর্গাপূজার সময় ৩ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে সেটির পরিমাণ কমিয়ে ২ হাজার ৪২০ টন করা হয়।