কক্সবাজার শহরের উত্তরণ আবাসিক এলাকায় এক যুবকের সঙ্গে স্ত্রীকে ধর্ষণের পর তার সামনে স্বামীর পরপর হত্যা ঘটেছে, যেখানে অভিযুক্ত একজনকে পুলিশ আটক করেছে। এই ঘটনাটি শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১টার দিকে ঘটে। কক্সবাজার সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইলিয়াস খান মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হত্যার পর রক্তাক্ত অবস্থায় পালিয়ে যাওয়া অভিযুক্তকে স্থানীয়রা পাকড়াও করে পুলিশে সোপর্দ করে।
নিহত ব্যক্তির বয়স ৫৫ বছর, তিনি রাঙ্গামাটির বাসিন্দা। অভিযুক্ত হিসেবে আটক করা হয়েছে ৫৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে, যিনি মদ্যপ অবস্থা ছিলেন। তারা স্থানীয় সুপারি বাগানে শ্রমিকের কাজ করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত বিরেল চাকমা নিহত রঞ্জন চাকমা ও তার স্ত্রীকে আগে থেকে চেনা-শেখা। তাদের পরিবারের বাড়ি রাঙ্গামাটিতে। বেশ কিছু মাস ধরে ত্রিপুরার উত্তরণ আবাসিক এলাকায় ভাড়া থাকছিলেন বিরেল। অপরদিকে রঞ্জন ও তার স্ত্রী রাঙ্গামাটির আনারস বিক্রি করতে কক্সবাজারে এসেছিলেন এবং পরিচয়ের সুবাদে তারা বিমলের বাসায় আশ্রয় নেন।
ওসি বলেন, শনিবার রাতে বিরেল ও রঞ্জন মদপান করছিলেন। এ সময় বিরেল পাশের এক কক্ষে গিয়ে রঞ্জনের স্ত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ ঘটনা দেখে স্ত্রী রঞ্জনকে জানায়। এর কিছুক্ষণ পরে বিরেল ও রঞ্জন মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। কিন্ত সেই ঝগড়া শেষে বিরেল স্বামীর ওপর ছুরি দিয়ে হামলা চালিয়ে তাকে জবাই করে হত্যা করে। পরে ব্যাগ নিয়ে পালানোর সময় রক্তমাখা হাত দেখে স্থানীয়রা তাকে আটক করে। ঘটনাস্থলে গিয়ে তারা মরদেহ দেখতে পায়, পাশে অর্ধনগ্ন স্ত্রী কান্নাকাটি করছেন। জিজ্ঞাসাবাদে বিরেলই হত্যার জন্য দায়ী বলে স্বীকার করেছে এবং নিহতের স্ত্রীও একই কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকারীকে আটক করে এবং মরদেহ মর্গে পাঠায়। মরদেহের পাশে থাকা স্ত্রী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
আটক ব্যক্তিকে থানায় হাজত করে রাখা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করা হয়, সাথে ধর্ষণের আলামত থাকায় নিহতের স্ত্রীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
অতিরিক্ত সূত্র জানায়, বিরেল ও রঞ্জন চাকমা স্থানীয় এক সুপারি বাগানে শ্রমিকের কাজ করতেন। অন্য একটি সূত্র বলছে, রঞ্জন ও তার স্ত্রী আনারস বিক্রি করে থাকতেন। তবে স্থানীয়রা বলেন, বাসায় এসে ধর্ষণের চেষ্টা, ঝগড়া আর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে তারা মনে করেন, পারিবারিক একটু ঝগড়ার ফল এই নির্মম ঘটনা ঘটেছে। চাকমা পরিবার বলে স্থানীয় কেউ তাদের ব্যাপারে খুব বেশি খোঁজ খবর রাখতেন না।