রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ি গ্রামে সোমবার ভোরে এক শিশুর খুনের ঘটনায় শোরগোল পড়ে গেছে। নিহত শিশুটি ছিল বাবুলাল ও তুলসী রানী দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান, যে মাত্র পাঁচ মাস বয়সী। এই ঘটনায় মারাত্মক উদ্বেগ ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, শিশুটি কাঁদাকাঁদি করলে তার দাদি পাতানি রানী সকালে তার মাকে তুলে দিতেন দুধ খাওয়ানোর জন্য। কিন্তু কিছুক্ষণ পর ওই শিশুটিকে ঘরে নিয়ে গলায় কাটা করে হত্যা করে তুলসি রানী। পরে সেই রক্তাক্ত দেহ তার স্বামী বাবুলালকে দেখান। এ সময় গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে ছুটে এসে তুলসি রানীকে আটক করে।
শিশুর বাবা, বাবুলাল, বলেন, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। বাংলোয় মাসখানেক আগে স্ত্রীর মানসিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে, তাই মেয়েকে আমি আমার মা’য়ের কাছেই রেখে এসেছি। আজ ভোরে শিশুটি কান্নাকাটি করছিল, তখন স্ত্রী তাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য নিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর যা হলো, তা আমি কল্পনাও করতে পারিনি।
অন্যদিকে, শাশুড়ি পাতানি রানী জানান, কিছু দিন ধরে শিশুটিকে তার কাছে রাখা হয়েছিল। সেই সকালে শিশুটি কান্নাকাটি করছিল। এই অবস্থায় তার মেয়েকে দুধ খাওয়ানোর জন্য দেন। কিছুক্ষণ পর দেখা যায়, তার স্ত্রী হাতে শিশুটিকে নিয়ে চিৎকার করছেন। তখন তিনি দৌড়ে গিয়ে দেখে, শিশু গলাই কাটা অবস্থায় পড়ে আছে।
ঘটনার পরে আটক করা তুলসি রানী গণমাধ্যমের কাছে অমূলক কথাবার্তা বলছেন। পরিবার ও প্রতিবেশীদের ধারনা, মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে এই ঘৃণ্য ঘটনা ঘটতে পারে। অনেকেই মনে করেন, এর পেছনে মানসিক ভারসাম্যহীনতা রয়েছে।
তুলসি রানীর ভাই মানিক মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার বোন অনেক সন্তানপ্রেমী। তবে যদি তিনি সুস্থ থাকতেন, তাহলে এই ধরনের কিছু করার কথা নয়।
কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সবিত্রী সেন বলেন, এই ঘটনার খবর শুনে খুবই ক্ষোভ ও দুঃখ হয়। তিনি জানিয়েছেন, নিহত শিশুর মা মানসিক রোগে ভুগছিলেন।
তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক নিশ্চিত করেছেন, অভিযুক্ত নারীকে আটক করা হয়েছে এবং তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। পরিবার ও স্বজনরা জানান, তার মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। পুলিশ এখন মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।