২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ব্রাজিলের ফুটবল দলের বাইরে থাকা সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা নেইমার (৭৯ গোল) দীর্ঘদিন ধরে চোটের কারণে মাঠের বাইরে রয়েছেন। তার বাঁ হাঁটুর লিগামেন্ট ও মেনিসকাস ছিঁড়ে গিয়েছিল, যার ফলে বেশ কয়েক মাস সে মাঠের বাইরে ছিল। সেপ্টেম্বরে আবার দলের জন্য প্রস্তুতি নেবার কথা ছিল, কিন্তু চোটের কারণে ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি শেষ মুহূর্তে তাকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের চিলি ও বলিভিয়া ম্যাচের জন্য পরিকল্পনা থেকে বাদ দেন।
যদিও তার লক্ষ্য এখনো বিশ্বকাপে খেলানো। আনচেলত্তি মনে করেন, নেইমার দলের গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য হতে পারেন। তবে এজন্য তাকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। ব্রাজিলের জন্য বিশ্বকাপে খেলতে হলে তাকে প্রমাণ করতে হবে যে, তার শারীরিক অবস্থা ভালো এবং সক্ষম। আনচেলত্তির বক্তব্য, নেইমারের প্রতিভার চেয়ে তার শারীরিক সক্ষমতাই মূল বিষয়। তিনি বলেন, ‘‘নেইমার কেমন খেলেছে, সেটা দেখা আমি চাই না। সবাই জানে তার প্রতিভা। তবে আধুনিক ফুটবলে সফলতার জন্য খেলোয়াড়ের শারীরিক ফিটনেস জরুরি। যদি সে সেরা অবস্থায় থাকেন, তবে দলে তার কোনো সমস্যা হবে না। আমরা সবাই চাই, নেইমার ভালো শারীরিক অবস্থায় থাকুক। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি এবং বলেছি, ‘তোমার হাতে সময় আছে সেরা প্রস্তুতি নেওয়ার।’ যাতে সে দলে থাকতে পারে এবং বিশ্বকাপে দলের জন্য সাহায্য করতে পারে।
নেইমার অতীতে উইঙ্গার ও কেন্দ্রীয় আক্রমণভাগে খেলেছেন। তবে আনচেলত্তি মনে করেন, এখন তিনি আর উইঙ্গার হিসেবে খেলতে পারছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আলোচনা করেছি। জুনে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচের আগে সে হোটেলে এসেছিল। সেখানে আমরা বিষয়টি স্পষ্ট করে নিয়েছি। তাকে আমি আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার বা স্ট্রাইকার হিসেবে দেখব। তাকে এখন মূল কেন্দ্রে খেলতে হবে। বাইরে খেলার সুযোগ নেই, কারণ আধুনিক ফুটবলে ফরোয়ার্ডের শারীরিক শক্তি খুব জরুরি। তবে আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার হিসেবে সে কোনো সমস্যা দেখছি না।
ব্রাজিল জুনে ২০২৬ বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে। তবে সম্প্রতি বলিভিয়ার বিপক্ষে ১-০ গোলে হারার ফলে তারা বাছাইপর্বে পঞ্চম স্থানে থেকে শেষ করেছিল, যা ছিল হতাশাজনক।
তবে আনচেলত্তি ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি আগামী বছরের বিশ্বকাপের জন্য অপেক্ষা করছেন এবং চাইলে ২০৩০ সাল পর্যন্ত দায়িত্বে থাকতে ইচ্ছুক। তবে ব্রাজিলের সঙ্গে তার বর্তমান চুক্তির মেয়াদ মাত্র এক বছর।
আনচেলত্তি বলেন, ‘‘বিশ্বকাপে ব্রাজিলের জন্য খেলা সত্যিই বিশেষ কিছু। আমি একটি বছরের চুক্তিতে আছি, বিশ্বকাপের পরে সবকিছু খোলা থাকবে। তখন আমার আর একটি বছরই থাকছে এবং সেটা ঠিক মনে করি। যদি ব্রাজিলিয়ান ফুটবল সংস্থা চায়, আমি দায়িত্ব চালিয়ে যেতে প্রস্তুত। আমি এখানে খুবই সুখী, আমার পরিবারও খুশি। আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করতে পারি এবং সিদ্ধান্ত নিতে সময় আছে। আমি ২০৩০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব চালিয়ে যেতে চাই, সেটাও সম্ভব।’’
আজকের খবর/বিএস