প্রখ্যাত লালন সংগীত শিল্পী ফরিদা পারভীন নিজের প্রাণের স্বস্তি খুঁজে পেতেন কুষ্টিয়ায়। তাঁর শৈশব-কৈশোরের বেশ কিছু সময় কেটেছে এই শহরে, যেখানে তিনি লালনের গানের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন গভীরভাবে। শহরটির সঙ্গে তাঁর স্মৃতি অটুট, যেখানে তিনি স্বচ্ছন্দে গান গাইতেন এবং শান্তি পেতেন।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) শেষবারের মতো কুষ্টিয়ায় যাচ্ছেন এই কিংবদন্তি শিল্পীর নিথর দেহটি। ঢাকায় অবস্থিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে লাশবাহী গাড়িতে করে বাদ জোহর তাঁর দেহ রওনা হয়। এই সময় তার পরিবারের সদস্য ও কিছু আত্মীয়স্বজন তার সঙ্গে ছিলেন।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ১০টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পরে তার সন্তানরা জানিয়েছেন, আম্মার ইচ্ছা ছিল নানা-নানীর কবরে শায়িত হবেন। তবে, তিনি জীবদ্দশায় কুষ্টিয়ায় যেতে পারেননি, আর শেষ ইচ্ছে পূরণের জন্য তার নিথর দেহ কুষ্টিয়ায় আসছে।
শিল্পীর শেষ ইচ্ছে অনুযায়ী, তার দেহ কুষ্টিয়া পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে শায়িত হবে। তবে এর আগে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অগণিত মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আবহাওয়ার কারণে কিছুটা বিলম্বে ১২টার পর শ্রদ্ধা নিবেদন শুরু হয় সেখানে। প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও মানুষ প্রিয় শিল্পীকে শেষ বারের জন্য শ্রদ্ধা জানাতে হাজির হন।
শ্রদ্ধা শেষে, বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তার দেহ রওনা হয় কুষ্টিয়ায়। কুষ্টিয়া পৌঁছানোর পর সেখানে আবারও দ্বিতীয় জানাজা হবে এবং শেষে তাকে শহরের কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
অবশ্য, বেশ কিছু দিন ধরে অসুস্থ ছিলেন ফরীদা পারভীন। কিডনি সমস্যা, ডায়াবেটিসসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। সপ্তাহে দুদিন ডায়ালাইসিস চলত তার। এই বছর তিনবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
সর্বশেষ ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। কোভিডের মতো গুরুতর অবস্থার কারণে আইসিইউতে রাখা হয় এবং লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। সেখান থেকে আর ফিরতে পারেননি তিনি।