কাতারের উচ্চপর্যায়ের একজন কর্মকর্তা, মোহাম্মদ আল-খুলাইফি, গত বুধবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এর প্রেসিডেন্ট তমুকো আকানের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকটি ইসরায়েলের নজিরবিহীন আক্রমণের বিরুদ্ধে কাতার থেকে আইনি কার্যক্রম starter করার অংশ হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকের পর এক্সে দেওয়া পোস্টে আল-খুলাইফি উল্লেখ করে বলেছেন, দ্য হেগ সফরটি ছিল ‘আইনি পথ খুঁজে দেখতে এক গুরুত্বপূর্ন পদক্ষেপ’। তার ভাষায়, ইসরায়েলের অবৈধ সশস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা কাতার পক্ষ থেকে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।
এর আগে, গত বছর আইসিসিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। এই মামলায় গাজার বেসামরিক জনগণকে সরাসরি লক্ষ্য করে আক্রমণ, দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অভিযোগ আনা হয়। গত নভেম্বরে, এই দুই নেতা’র বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।
অন্যদিকে, উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের (জিসিসি) ছয় সদস্য দেশ যৌথ প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে একমত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দোহায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা ইসরায়েলি হামলার পরিপ্রেক্ষিতে নেয়া হয়েছে। ৯ সেপ্টেম্বর, দোহার সেই বৈঠক চলাকালীন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের সময়ই হামলা চালানো হয়। হামাসের দাবি, তাদের শীর্ষ নেতাদের কেউ নিহত হননি, তবে পাঁচজন সদস্য ও কাতার সরকারের একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা ছিলেন নিহত।
গাজা শহরে ইসরায়েলের ব্যাপক হামলা চলেছে, যেখানে বিমান হামলা ছাড়াও জমি অভিযান চালানো হয়। শহর ছেড়ে পালানো মানুষজন দৌড়ে বা যানবাহন আর গাধার ওপর চেপে শহর থেকে বের হয়ে পড়েছেন। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের বিবরণ, সদ্যকার হামলায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ ফিলিস্তিনী গাজা ছেড়ে চলে গেছেন। শহরটির মোট জনসংখ্যা আগের মত ছিল প্রায় ১০ লাখ, যেখানে অধিকাংশ মানুষ পূর্বের বিভিন্ন দিক থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক চাপ এবং কাতারের উদ্যোগের মধ্য দিয়ে পরিস্থিতির আরও বিশদ ও কঠিন পর্যায়ে পৌঁছানোর আশঙ্কা রয়েছে।