সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে নতুন এক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভারত এই বিষয়টি জানতে পেরেছে এবং তা নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ভারত জানিয়েছে, তারা এই চুক্তির বিষয়ে অবগত এবং দেশের স্বার্থ ও সামগ্রিক নিরাপত্তা রক্ষা করার জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের রিয়াদ সফরের সময় সৌদি আরব ও পাকিস্তান যৌথভাবে ঘোষণা করে, কোনো এক দেশের বিরুদ্ধে আঘাত এলে তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এই ঘোষণা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বেশ গুরুত্ব পায়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই চুক্তির বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করছে এবং এর সম্ভাব্য প্রভাব—বিশেষ করে এর আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার ওপর—বিশ্লেষণ করা হবে। ভারত সরকারের অঙ্গীকার, তারা দেশের সুরক্ষা ও স্বার্থের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।
শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বৈঠকের পর প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, এই চুক্তি দুই দেশের অভিন্ন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। এটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। পাশাপাশি, একযোগে কোনও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলার লক্ষ্যও রয়েছে।
অন্যদিকে, সৌদি আরব ভারতের গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক অংশীদার। এটি ভারতের অন্যতম প্রধান জ্বালানি সরবরাহকারী দেশ এবং লাখ লাখ ভারতীয় সেখানে কাজ করেন।
সম্প্রতি, ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ অভিযানে পাকিস্তানে হামলার পর, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল-জুবায়ের হঠাৎ করে দিল্লি সফর করেন। এরপর ইসলামাবাদেও যান তিনি, যা সম্পর্কের জটিলতা বোঝায়।
বছর জুড়ে সৌদি-ভারত সম্পর্কের উন্নয়নও লক্ষ্যণীয়। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজস্থানে ‘সাদা-তানসিক’ নামক একটি যৌথ সামরিক মহড়া অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সৌদি সেনাবাহিনী অংশ নেয়। এসব ঘটনা বোঝায়, দুই দেশের আন্তঃসামরিক সম্পর্ক ধীরে ধীরে গাঢ় হয়ে উঠছে।