যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি চীনে সফরের ঘোষণা দিয়েছেন, যা আগামী বছরের শুরুর দিকে অনুষ্ঠিত হবে। বেইজিংয়ের আমন্ত্রণে এ সফর হচ্ছে, যেখানে তিনি চীনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে আগ্রহী। ট্রাম্প জানান, এই সফর নিয়ে সমঝোতা প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন, এবং তিনি খুব দ্রুত চীনে যাবেন।
এছাড়া ট্রাম্প বলছেন, চীন কখনোই তাইওয়ান দখল করতে চায় না। This বিবরণ তিনি মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে আল জাজিরার মাধ্যমে প্রকাশ করেন।
সোমবার হোয়াইট হাউসের প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমাকে চীনে সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং আমি খুব দ্রুত সেখানে যাচ্ছি।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, এই মাসের শেষের দিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আশা করছেন সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে ন্যায্য বাণিজ্য চুক্তি হবে। তবে সম্প্রতি শুল্ক ইস্যুতে দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এক সপ্তাহের মধ্যে পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে উঠেছিল যে নতুন করে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। চীন বিরল খনিজের রপ্তানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলে, ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দেন যে, তিনি চীনা পণ্যের শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারেন।
কিন্তু ট্রাম্প ইতিবাচক বার্তা দিয়ে বলেন, দুটো দেশই যেন একসঙ্গে উন্নতি করে। তিনি দাবি করেন, চীন যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন কিনতে চায়, কারণ বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে কৃষকদের বড় ক্ষতি হয়েছে, এবং মধ্যপশ্চিমের কৃষকরা তাদের সবচেয়ে বড় বাজার হারিয়েছেন। এই মন্তব্যের ফলস্বরূপ শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে সয়াবিনের দাম এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছে।
ত্রাম্প বলেন, তার সম্পর্ক শি জিনপিংয়ের সঙ্গে ভালো, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তরের পূর্ব মূল্যায়নে বলা হয়েছিল, চীন সম্ভাব্য ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের পরিকল্পনা করছে।
তবে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমাদের সম্পর্ক ভালো থাকবে। চীন এখনও তাইওয়ান দখল করতে চায় না।’ তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজের সঙ্গে বৈঠকের সময় এ মন্তব্য করেন।
তবুও তিনি স্বীকার করেন যে, চীন তাইওয়ান নিয়ে আগ্রহী। এমনকি তিনি এটিকে শি জিনপিংএর “চোখের মণি” বলেও উল্লেখ করেন। কিন্তু তিনি মনে করেন, চীন জানে যে যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি, তাই তারা আক্রমণে যাবেন না।
ট্রাম্প বলেন, “আমাদের সব ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব আছে, কেউ এটা দিতে পারবে না।”
উল্লেখ্য, গত জুনে সিঙ্গাপুরে শ্যাংরি-লা ডায়ালগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ চীনকে এই অঞ্চলের জন্য হুমকি বলে উল্লেখ করেন, যার জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে যে, ‘তাইওয়ানকে কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার বা আগুনের খেলা উচিত নয়।’