বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের কোনো সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি শনিবার (০১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে মুক্তিযোদ্ধা দলের এক আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, একটি কিছু মহল খুবই পরিকল্পিতভাবে একাত্তরকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে তাদের এই চেষ্টাটি সফল হবে না, কারণ একাত্তর হলো আমাদের সত্যিকারের জন্মভূমি। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে থাকা শক্তিগুলো ষড়যন্ত্রের জন্য লিপ্ত হয়েছে। তারা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে অবজ্ঞা করে ‘গোলমাল’ আখ্যা দিয়েছিল, কিন্তু জাতি তা ভুলে যায়নি। তিনি আরও বলেন, যদি অভ্যুত্থানের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হয়ত অনুষ্ঠিত হতো, তবে অপশক্তি এত শক্তিশালী হয়ে উঠে তাদের সাহস হত না। আমাদের ঘোষণা করা ৩১ দফার মধ্যে সব সংস্কারের বিষয় স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে। আমরা সংস্কার চাই, তবে পদক্ষেপের জন্য সংসদই সিদ্ধান্ত নেবে। পিএর (প্রেসার অ্যান্ড রিফারেনস) নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে—এ বিষয়ে বোঝা যায় না, কারণ শেষ সিদ্ধান্ত সংসদই নেবে। সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে।
শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎকারের বিষয়েও তিনি বলেন, তিনি ভারতে বসে বিভিন্ন মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন। এ কারণে ভারত সরকারের কাছে তার ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানানো উচিত, কারণ তাকেই এখন সামনের আদালত কিংবা বিচারকের মুখোমুখি হতে হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, বিএনপি এখন এক ধরনের অর্জুন গাছের ছালের মতো, যখন প্রয়োজন তখন কেটে নেয়া হয়। তিনি যুক্তি দেন যে দেশের পরিস্থিতি এখন বহুরূপীর ছাঁয়ে ঢাকা। বিএনপি’র জন্য এখন প্রয়োজন ধৈর্য্য ধরে সময়ের অপেক্ষা করা।
আলাল আরও জানিয়েছেন, তৎকালীন সরকারের সময় জামায়াত সুবিধা পেয়েছিল। তিনি বলেন, জামায়াতের অনেক শীর্ষ নেতা একসময় জাসদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং গলাকাটা পার্টির সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। ৫ আগস্টের পর থেকে শিবিরের অনেক সদস্য ছাত্রলীগের ভেতর থেকে বের হয়ে গেছে, আর এখন তারা প্রকাশ্যেই থাকার পরিকল্পনা করছেন।
মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, জামায়াত এখন রূপ বদলানোর কাজে লিপ্ত হয়েছে। তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও সমাবেশ করে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে চাইছে। কারণ, বিএনপি এখন এক অর্জুন গাছের ছালের মতো, যার যখন তখন কেটে দেয়া হয়। তিনি একান্তভাবে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জামায়াতের শাস্তি দাবি করেন।

