বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে বগুড়ার নন্দীগ্রামে গত চার দিন ধরে চলে ব্যাপক বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাস। এই পরিস্থিতি মৌসুমের গুরুত্বপূর্ণ ধানে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। বুধবার দুপুরের পর থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টির কারণে পাকা ও আধা-পাকা ধানের শিষে ভিজে যাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। তারা উদ্বিগ্ন, তাদের চারিত্রিক কষ্টের কারণ হচ্ছে ধান ঝরে পড়া আর ক্ষতির আশঙ্কা। পাশাপাশি, রবি মৌসুমের জন্য আলু, সরিষা এবং অন্যান্য শস্যের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া কৃষকদের পরিকল্পনাও বিঘ্নিত হয়েছে, কারণ বৃষ্টির কারনে মাঠে কাজ এখন আটকে গেছে। উপজেলার কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ে জমি থেকে পানি বের করে না দিলে ধানের ক্ষতি আরও বাড়বে। তারা বলেছেন, যেখানে ক্ষতি হয়েছে, সেখানে দ্রুত পানি নিষ্কাসন নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ধানের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সুরক্ষিত হয়। এ পর্যন্ত নন্দীগ্রামে প্রায় ৩০ হেক্টর জমির ধান ঝুঁকে পড়েছে। কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, এ মৌসুমে মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষের। তবে, ইতোমধ্যে এ চেয়েও বেশি জমিতে ধান রোপা হয়েছে। সেই সঙ্গে এই মৌসুমে রবি শস্য হিসেবে আলু চার হাজার পাঁচশ’ হেক্টর, সরিষা সাত হাজার পঞ্চাশ’ হেক্টর, পেঁয়াজ চাষ চার পাঁচ হেক্টর এবং অন্যান্য শাকসবজিতে আরও বিস্তৃত আয়োজন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষকরা বলছেন, এখন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের সময়। পাকা ধানের শিষে জল জমে গেছে, ফলে ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ডোহার গ্রামের কৃষক কৃষ্ণ চন্দ্র জানান, তার আট বিঘা ধানের পাকা শস্য বৃষ্টির কারণে নড়ে গেছে, জমিতে হাঁটু পানি জমে থাকায় ধান কাটা সম্ভব নয় বলে মনে করেন তিনি। অপরদিকে, হাটলাল গ্রামের মিনহাজুর রহমান হাবিব বলেন, দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। যদি আরও বৃষ্টি না হয়, তবে ক্ষতি কম হবে বলে আশাবাদী তারা। কৃষি অফিসের গাজীউল হক বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্ত জমির পানি যত দ্রুত সম্ভব বের করে দিতে হবে। আলভাবেই ক্ষতি সামান্য হবে, তবে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ক্ষতি আরও বাড়তে পারে। আবহাওয়ার অবস্থা স্বাভাবিক না থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কাও রয়েছ।

