যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও গাজার পরিস্থিতি এখনও সংকটজনক। ফিলিস্তিনের গাজায় প্রত্যাশিত মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে ভীষণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ইসরায়েল এমনকি মাত্র একটি চতুর্থাংশ ত্রাণের অনুমতি দিয়েছে, যার অর্থ দেশটির সম্পূর্ণ অবরোধে অবদান রেখেছে। আর এ কারণেই পানি, খাবার, ওষুধসহ মৌলিক প্রয়োজনীয় জিনিসের অভাবে হাহাকার দেখা দিয়েছে গাজা অঞ্চলে।
শনিবার (২ নভেম্বর) গাজার সরকারি গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, অক্টোবর ১০ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩,২৩৮টি ট্রাক মানবিক ও খাদ্যসামগ্রী গাজায় প্রবেশ করিয়ে বলা হলেও, দৈনিক গড়ে মাত্র ১৪৫টির মতো ট্রাক ঢুকতে পারছে। এটি যুদ্ধবিরতি ঘোষণার প্রতিদিনের লক্ষ্যমাত্রা ৬০০ ট্রাকের মাত্র ২৪ শতাংশ। এই অনুপাতে বোঝা যায়, দেশটির জন্য আকস্মিক মানবিক সংকট কতটা গভীর।
গাজার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল ইচ্ছা করে ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকালো, যার ফলে ২৪ লাখেরও বেশি মানুষ ভয়াবহ মানবিক সংকটের মধ্যে পড়েছেন। এই পরিস্থিতির জন্য সম্পূর্ণ Responsible বলে মন্তব্য করেছে গাজার সরকারি কর্মকর্তারা।
মূলত, যুদ্ধবিরতি সফলভাবে কার্যকর হওয়ার পরও, গাজায় খাদ্য, পানি, ওষুধের প্রবাহ খুব সীমিত। পাশাপাশি অনেক পরিবার ঘর-বাড়ি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে, আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। congelado এই পরিস্থিতির কারণই হলো ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা। গত দু’বছরে ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনে গাজা অঞ্চলের বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, অনেক পরিবার এখন অস্থায়ী আশ্রয়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র ফারহান হক জানান, ইসরায়েল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রুট পরিবর্তনের কারণে ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তিনি জানান, ইসরায়েলি বাহিনীগুলো এখন মিসরের সীমান্তের ফিলাডেলফি করিডর দিয়ে অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা দিয়ে ত্রাণ পৌঁছানোর চেষ্টা করছে, যা যানজটে পড়েছে। এ পরিস্থিতিতে, আরও বেশি রাস্তা ও সীমান্ত পথ খুলে দেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োজন।
অপর দিকে, যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ করে ইসরায়েলি বাহিনী সোমবারও গাজার বিভিন্ন এলাকা দখল ও ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিসে বিমান, কামান ও ট্যাংকের গোলায় ব্যাপক ধ্বংস সৃষ্টি হয়। উত্তরের জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের আশপাশেও ইসরায়েলি সেনারা অনেক ভবন ধ্বংস করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ড্রোন ও ভারী গোলাবর্ষণের কারণে ঘর-বাড়ি ও কৃষিজমি ধ্বংসের স্তূপে পরিণত হয়েছে। আকাশে অবিরাম ড্রোন ও বোমা বর্ষণের ফলে গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পৌঁছাতে পারছে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, চলমান এই সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৫৯৪ জন। পরিস্থিতি প্রতিদিনই মারাত্মক হওয়ার দিকে এগোচ্ছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগের অপেক্ষায় গাজা।

