বাংলাদেশের ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চীনকে পাশাপাশি আরও গুরুত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে, বিশেষ করে প্রতিরক্ষা খাতে। বেইজিংয়ের সঙ্গে ঢাকার নতুন সম্পর্কের কথা স্বাভাবিকভাবেই চিন্তাচেতনায় আসছে প্রতিবেশী দেশগুলোর থিঙ্কট্যাংকে। কিছুদিন আগেই আলোচনায় এসেছিল যে, বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকার চীনের অত্যাধুনিক জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার পরিকল্পনা করেছে। এমনকি পাকিস্তান, তুরস্ক ও ইতালির কাছ থেকেও যুদ্ধবিমান কেনার আগ্রহ দেখিয়েছে সরকার।
আরও সম্প্রতি জানতে পেরেছি যে, বাংলাদেশ এবার চীনের কাছ থেকে ভয়ংকর ও শক্তিশালী এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনতে যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও আধুনিক ও সামরিক শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই খবরটি রোববার (২ নভেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য উইকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, যেখানে ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া সূত্রশিক্ষিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ তার প্রতিরক্ষা সামগ্রীর যে পর্যায়ে এখন এসেছে, তার ৭০ শতাংশেরও বেশি কিছুদিন আগে চীনের কাছ থেকে কিনে আনেছে। জে-১০সি যুদ্ধবিমান কেনার পরই ঘোষণা আসে যে, এবারে এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা প্রথম ২০০৮ সালে ঝুহাই এয়ারশোতে প্রকাশ্যে আসে। এই ক্ষেপণাস্ত্র চীনা পিএলএ ছাড়াও বর্তমানে কাতার ও মিয়ানমারেও ব্যবহার করছে। এর যথাযথ ভার্সনগুলোর পাল্লা প্রায় ২৮০ কিলোমিটার। এর স্ট্যান্ডার্ড কনফিগারেশনে রয়েছে কঠিন জ্বালানি ক্ষেপণাস্ত্রসহ আটটি ক্যানিস্টার, যেখানে প্রজেক্টাইলটি বস্তার মধ্যে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়, যা বছর ধরে কোনও রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন ছাড়াই চালানো যায়।
ডিফেন্স সিকিউরিটি এশিয়া সংস্থার প্রতিবেদনে জানানো হয়, এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিটি প্রায় ছয় মিটার লম্বা এবং ০.৪ মিটার ব্যাসবিশিষ্ট। ওয়ারহেড অনুযায়ী এর ওজন অর্ধশত কেজি থেকে এক হাজার ৩০০ কেজির মধ্যে হতে পারে, যার মধ্যে উচ্চ বিস্ফোরক, সাবমিনেশন ডিসপেন্সার বা ক্লাস্টার পেলোড থাকতে পারে।
এসওয়াই-৪০০ ব্যবস্থার মধ্যে সক্রিয় বা প্যাসিভ রাডার বা আইআইআর সিকার অন্তর্ভুক্ত, যা টার্মিনাল পর্যায়ে লক্ষ্য শনাক্ত করতে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ক্ষেপণাস্ত্রগুলো আজকের দিনে আধুনিক সিস্টেমের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়ানোর জন্য টার্মিনাল কৌশল করতে পারে। এটির গতি ম্যাক ৫.৫ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, এবং এটি হাইব্রিড গাইডেন্স স্যুটে সজ্জিত, যা ইনর্শিয়াল নেভিগেশন ও স্যাটেলাইট অগমেন্টেশন বা জিপিএস দিয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করে।
প্রতিটি এসওয়াই-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র মাত্র দশ মিনিটের মধ্যে লঞ্চের জন্য প্রস্তুত হতে সক্ষম এবং দ্রুত পুনরায় লোড করা যায় ছোট রকেট বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে। এইসব আধুনিক অস্ত্রের ক্রয় বাংলাদেশের সামরিক প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।

