বাংলাদেশের আইনসংক্রান্ত পরিস্থিতি সাংবাদিকদের জন্য খুবই সহায়ক নয়—এমনটাই মন্তব্য করেছেন দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেক পথ খোলা রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ‘আকাশের তারা যতই থাকুক না কেন, আইনের ধারা অনুযায়ী এর প্রয়োগ হয় সাংবাদিকদের প্রতিরোধে।’
সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে, সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী ‘বে অব বেঙ্গল কনভারসেশন ২০২৫’-এর তৃতীয় দিনে ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশ’ শীর্ষক পর্বে তিনি এ কথা বলেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ক্ষমতাসীন কেউ থাকুক না কেন, দীর্ঘ দিন ধরেই সাংবাদিক দমন ও কারসাজির প্রবণতা চলে আসছে, যা ব্রিটিশ শাসনামল থেকেই শুরু। আইসিটি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের পর তৈরি হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে তিনি ‘প্রতারনা’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি উল্লেখ করেন, অতীতে এই ধরনের আইনের অপপ্রয়োগের উদাহরণ দেখা গেছে। একইসঙ্গে বলেন, সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধ ও লেখনী বন্ধে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞামূলক আইনের অবসান দরকার। শুধু আইনের সংশোধন বা বাতিল করলেই হবে না, এর সঙ্গে সরকারের মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল জানান, বর্তমানে সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে গুমের ঘটনা ঘটেনি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডও কমে এসেছে। গত ১৭ মাসে পুলিশের বিরুদ্ধে কোনো ‘গায়েবি মামলা’ দায়ের হয়নি। তিনি আরও বলেন, নতুন সরকার যদি ইচ্ছা করে, তারা যেন সাংবাদিকদের ওপর এ ধরনের নিপীড়নমূলক আইনি পথ বন্ধ করে দেয়।
আলোচনায় অংশ নেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সারা হোসেন, অধ্যাপক সাজ্জাদ সিদ্দিকী, ও ট্রায়াল ওয়াচের জ্যেষ্ঠ প্রোগ্রাম ম্যানেজার মানেকা খান্না। সহসভাপতিত্ব করেন সঞ্চালক রোমান উদ্দিন।

