ইথিওপিয়ার হাইলি গুবি আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে উৎপন্ন ঘন ছাইয়ের মেঘ এখন ভারতের পশ্চিমরা সীমান্তে প্রবেশ করছে। এর ফলে সোমবার (২৪ নভেম্বর) দেশটির বেশ কিছু বিমান সংস্থা আশঙ্কাজনক পরিবেশের কারণে একঝাঁক ফ্লাইট বাতিল করেছে। ভারতীয় বিমানবন্দর এবং এয়ারলাইন্সগুলোকে সতর্কতা হিসেবে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যাতে ঝুঁকি এড়ানো যায়। ইতিমধ্যে ছাইয়ের মেঘ উত্তর ভারতের আকাশে প্রবেশ করে বেশ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
রোববার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার বছর পরে এই প্রথমবারের মতো ব্যাপক অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটেছে ইথিওপিয়ার হাইলি গুবি আগ্নেয়গিরিতে। এর ফলে বিশাল ছাইয়ের এক প্রাচীর লাল সাগরের ওপরে দিয়ে ইয়েমেন ও ওমানের দিকে ধাবিত হয়েছে। পরে এই ছাইয়ের মেঘ উত্তর আরব সাগরে বিস্তৃত হয়।
ঘন ও ব্যাপক ছাইয়ের মেঘ দিল্লি, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশের আকাশে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই ছাই বায়ুর মান মারাত্মকভাবে খারাপ করতে পারে, তবে আকাশে উচ্চতায় হাজার হাজার ফুট উপরে অবস্থান করায় তেমন প্রভাব না পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই এই পরিস্থিতিতে কাজ করছে বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা, যেমন আকাসা এয়ার, ইন্ডিগো ও কেএলএম, যারা তাদের কিছু ফ্লাইট বাতিল করেছে। ভারতীয় ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উপর দিয়ে পরিচালিত সকল বিমানকে সতর্ক থাকতে হবে এবং ফ্লাইট পরিকল্পনা, রুটিং ও জ্বালানি প্রয়োজনে পরিবর্তন আনতে হবে।
বিমানসংস্থাগুলোর জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, যদি কোনো উড়োজাহাজে ছাইয়ের উপস্থিতি সন্দেহ হয়, যেমন ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতা কমে গেলে, কেবিনে ধোঁয়া বা গন্ধ দেখতে পাওয়া গেলে, সঙ্গে সঙ্গে রিপোর্ট করতে। একইভাবে, যদি কোনও বিমানবন্দর একটি বিমান চলাচলে প্রভাব পড়ে, তবে সংশ্লিষ্ট অপারেটরদের রানওয়ে, ট্যাক্সিওয়ে ও এপ্রনের পর্যাপ্ত পরিদর্শন নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
স্মারক হিসেবে জানানো হয়েছে, স্যাটেলাইট ইমেজারী ও আবহাওয়াজনিত তথ্য ব্যবহার করে ছাইয়ের মেঘের পর্যবেক্ষণ চালাতে হবে।
এদিকে, আকাসা এয়ার জানিয়েছে, ২৪ ও ২৫ নভেম্বর জেদ্দা, কুয়েত ও আবুধাবিগামী সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এই আগ্নেয়গিরির ছাইয়ের কারণে। একইভাবে, কেএলএম রয়েল ডাচ এয়ারলাইন্সের রাজধানী আমস্টারডাম থেকে দিল্লি রूटের ফ্লাইটগুলোই বাতিল হয়েছে।
ইন্ডিগো জানিয়েছে, তারা ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে ছাইয়ের প্রভাবের কারণে সব ফ্লাইটের পরিকল্পনা সংশোধন করছে।
বাংলাদেশে ভারতীয় এই পরিবেশ সংকটের ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, কারণ উচ্চতা অনুযায়ী ছাইয়ের স্তর বেশ নিচে থাকায় পরিবেশের উপর খুব বেশি প্রভাব পড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সতর্কতা অবলম্বন ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ইথিওপিয়ার এরটা আলে অঞ্চলে রোববার (২৩ নভেম্বর) সকালে এই অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা ঘটে। এর ফলে আশপাশের গ্রামগুলো ধুলায় ঢেকে যায় এবং মাঝারি মাত্রার ভূকম্পন অনুভূত হয়। এই আগ্নেয়গিরি সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে এবং এরটা আলে থেকে প্রায় নয় মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত।
সুত্র: এনডিটিভি
আজকের খবর / এমকে

