সরকারের অনুমোদিত ট্রাভেল পাস না থাকলে পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রি না করতে নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও কেয়ারি সিন্দাবাদ নামের একটি জাহাজ অবৈধভাবে টিকিট বিক্রি করে আসছিল। কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে চলতি পর্যটন মৌসুমে প্রথমবারের মতো কক্সবাজার সদর উপজেলার নুনিয়ারচর বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ চলাচল শুরু হওয়ার অন্যতম سبب ছিল এই অনিয়ম। ডিসিপ্লিন ও আইনানুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত দ্রুতই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নীলুফা ইয়াসমিন চৌधুরী জানান, তিন পর্যটককে ১৮০০ টাকা করে অবৈধভাবে ট্রাভেল পাস না থাকায় সরাসরি টিকিট বিক্রির জন্য অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। তিনি আরো বলেন, পর্যটকদের শুধুমাত্র স্থানীয় (লোকাল) জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে টিকিট সংগ্রহের মাধ্যমে ভ্রমণ করতে পারবে। অন্য সকল পর্যটকদের জন্য সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল পাস সংগ্রহ আবশ্যক।
প্রথম দিন খুব বেশি গ্রেপ্তার না করলেও জাহাজের কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয় এবং মুচলেকা নেওয়া হয়। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিয়ম হলে কড়াকড়ি আরোপের হুঁশিয়ারি দেন জেলা প্রশাসক। গত ১ নভেম্বর থেকে সরকার সেন্টমার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে, তবে রাত্রি অবকাশের সুবিধা নভেম্বরের শেষে শুরু হওয়ায় অনেক পর্যটক আগ্রহ দেখায়নি। আজ থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাসের জন্য পর্যটকদের রাত্রিযাপনের সুযোগ রয়েছে।
পর্যটকদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্মে টিকিট সংগ্রহ বাধ্যতামূলক, যেখানে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। এই কোড ছাড়া টিকেট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের’ সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, বর্তমানে ৬টি জাহাজ চলাচলের অনুমতি থাকলেও যাত্রীর নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আজ ৩টি জাহাজ যাত্রা করে। নদীর নাব্যতা এবং জোয়ার-ভাটার জন্য নির্ধারিত সময় অনুযায়ী যাত্রা চলবে, এবং বিকেলে সেন্টমার্টিন থেকে ফিরবেন।
প্রতি দিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক এখানে যেতে পারবে, প্রথম দিন ভিড় ছিল ১১৭৪ জন। এর পাশাপাশি পরিবেশের ক্ষতি এড়াতে নিষেধ করা হয়েছে পলিথিন ব্যাগ ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্য পরিবহন। পানীয় পানি সরবরাহের জন্য পরিবেশ পরিবেশ অধিদপ্তর পরিবেশবান্ধব বোতল প্রদান করছে।
জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর। তিনি আরও জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা, হয়রানি রোধ ও পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। একজন অতিরিক্ত ডিআইজি ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার শাখার প্রধান আপেল মাহমুদ বলেন, সরকার তাদের নির্দেশনা কঠোরভাবে মানা হচ্ছে কি না তা তদারকি করা হচ্ছে।

