বিশ্বের সবচেয়ে সমৃদ্ধ তেলযুক্ত দেশ ভেনেজুয়েলায় যুক্তরাষ্ট্র সম্ভবত খুব দ্রুত হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) একটি মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ তথ্য প্রদান করেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ভেনেজুয়েলার ভেতরে থাকা মাদক ব্যবসার অস্থিতিশীল অবকাঠামোই তাদের আসন্ন হামলার অন্যতম লক্ষ্য হবে।
ট্রাম্পের ভাষ্য অনুযায়ী, ভেনেজুয়েলার মাদক কারবারিরা বিপুল পরিমাণ ফেনটানিল তৈরি করে যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করে আসছেন, যা দেশের অসংখ্য মানুষ মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তিনি জানান, কেবল গত বছরই এই ড্রাগের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় দুই লাখ মানুষ মারা গেছে।
তিনি আরও জানান, তারা নৌপথের পাশাপাশি স্থলেও হামলা চালাবে, কারণ স্থলে হামলা শত্রুদের জন্য অনেক সহজ এবং তারা কোন চোরাচালান পথ এড়াতে পারেনি। ট্রাম্প দাবি করেন, মার্কিন প্রশাসন সকল তথ্য জানে এবং শিগগিরই তারা এই অপতৎপরতার বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভেনেজুয়েলার ওপর চাপ বাড়িয়ে চলেছেন, ক্যারিবীয় সাগরে বিশাল নৌবহর পাঠানোর পাশাপাশি দেশটিতে হামলার প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। গত সেপ্টেম্বরেও বিভিন্ন নৌযানে হামলা চালানো হয় এবং ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা অতিক্রম করার জন্য সতর্কতা জারি করা হয়।
বিশ্লেষকদের মনে মনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে যে, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ভেনেজুয়েলাকে আঘাত হানতে পারে, বিশেষ করে মাদুরো সরকার পতনের লক্ষ্যে। সোমবার কারাকাসে হাজার হাজার মাদুরো সমর্থক একত্রিত হয়ে USএর এই হুমকির প্রতি প্রতিবাদ জানায়।
মাদুরো এ পরিস্থিতিতে বলেন, ভেনেজুয়েলা শান্তি পেতে দাসত্বের পথ বেছে নেয়নি বরং দেশের প্রতি তাদের অগাধ ভালোবাসার শক্তি দেখিয়েছে। দেশের জনগণ মাদুরোর নেতৃত্বে প্রতিরোধ অব্যাহত রেখে যুক্তরাষ্ট্রের চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আছে।
অপরদিকে, মার্কিন সামরিক বাহিনী ক্যারিবীয় অঞ্চলে একাধিক যুদ্ধজাহাজ ও সেনা মোতায়েন করছে। তারা অভিযোগ করে, এসব নৌযানে করে ভয়ঙ্করভাবে মাদক চোরাচালান চলছিল। একাধিক ভিডিও প্রকাশে দেখা গেছে, মার্কিন সেনাদের হামলায় কিছু নৌকা ধ্বংস হয়েছে এবং কিছু মানুষ নিহত হয়েছে। এ সংক্রান্ত এই ভিডিওগুলো ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, তবে ট্রাম্প এটিকে রুখতে চান। তিনি বলেন, মাদক চোরাকারবারীরা গত বছর দুই লাখ মানুষের জীবন নষ্ট করেছে, এ সংখ্যা কমানোর জন্য মার্কিন সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, এই ধরণের দুষ্টচক্রকে নির্মূল করে তারা আর মাদক দেশে প্রবেশ করতে দেবে না।

