নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বুড়ি তিস্তা ব্যারাজের উজানে মূল স্রোতধারা খননের পরিকল্পনা নিয়ে তীব্র প্রতিরোধ দেখা দিয়েছে। নদী খননের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কয়েকদিন আগে বুড়ি তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় আনার পরে কুঠির ডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বারবার এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে উত্কণ্ঠিত হয়ে ওঠে ডিমলা, ডোমার এবং জলঢাকা এই তিন উপজেলার বুড়ি তিস্তা এলাকার প্রায় ৭৫০টি পরিবার ও তিন হাজারেরও বেশি মানুষ। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তারা প্রতিবাদ হিসেবে নীলফামারীর ডিমলা সদর ইউনিয়নের বুড়ি তিস্তা ব্যারেজের উজান কুটির ডাঙ্গায় মশাল মিছিল বের করে। এই শান্তিপূর্ণ মিছিলে কিশোর, নারীরা, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ অংশ নেন।
মিছিল শেষে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রায় এক হাজার ২শ’ ১৭ একর জমি ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে অধিকারের নামে অধিগ্রহণ করেছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে অন্তত ৭৫০টি পরিবার গৃহহীন হয়ে পড়বে এবং হাজার হাজার মানুষ তার জীবিকা হারানোর खतরা মোকাবেলা করবে।
বক্তারা আরও বলেন, বুড়ি তিস্তা নদী খনন করলে আমাদের পরিবার-পরিজন ও তিন ফসলের জমি কাপিয়ে যাবে। এই আশঙ্কায় বাধ্য হয়ে আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কোনভাবেই এই প্রকল্প চাইনা। অবিলম্বে এই খনন প্রকল্প বন্ধ করে আমাদের জীবন ও সম্পত্তির সুরক্ষা দিতে হবে।
ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান আজকের খবরকে জানান, ২০২১ সালের মে মাসে বুড়ি তিস্তা খননের জন্য ৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে পাঁচজন ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়। তিনি আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন ১ হাজার ২১৭ একর জমির মধ্যে বুড়ি তিস্তার মূল জলধারার ৬৬৭ একর জমি খননের প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

