কক্সবাজারে বসবাসরত রাখাইন জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি কীভাবে বর্তমান পরিস্থিতিতে রয়েছে, তা নিয়ে এক দিনব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মশালা আয়োজিত হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট (আমাই) এর উদ্যোগে, যেখানে এলজিইডি কক্সবাজারের কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নানা আলোচনায় অংশ নেওয়া হয়।
কর্মশালার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলী আকবর আজিজী। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন ইনস্টিটিউটের অতিরিক্ত পরিচালক (প্রশাসন) আবুল কালাম। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন এলজিইডি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ সায়েদুজ্জামান সাদেক ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের উপপরিচালক ড. খিলফাত জাহান যুবাইরাহ।
কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, তিনি বলেন, দেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে বসবাসকারী রাখাইন জনগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতি আজ বিভিন্ন কারণবশত হুমকির মুখে পড়েছে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগও প্রয়োজন।
প্রথম আলোচনা করেন লেদা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছেন টিং। তিনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরিবারে মাতৃভাষার চর্চা কমে যাওয়ায় নতুন প্রজন্মের মধ্যে ভাষা সংরক্ষণে দুর্বলতা দেখা দিয়েছে।
আরেকজন আলোচক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ ভূঁইয়া বললেন, রাখাইন ভাষা ও সংস্কৃতি সচেতনভাবে সংরক্ষণে পাঠ্যক্রম তৈরি, কমিউনিটি লার্নিং সেন্টার চালু এবং শিশুদের জন্য মাতৃভাষাভিত্তিক শিক্ষার উপায় আবশ্যক।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি মং হলা চিং মন্তব্য করেন, রাখাইন সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগिता, মাঠ পর্যায়ের গবেষণা ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততা জরুরি।
এছাড়া, জনপ্রিয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–শিক্ষার্থী, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা, আদিবাশী ফোরামের সদস্যরা, এনজিও কর্মী, উন্নয়নকর্মী এবং মিডিয়া ব্যক্তিরাও এই কর্মশালায় অংশ নেন। এই উদ্যোগের মাধ্যমে রাখাইন সংস্কৃতির সংরক্ষণ এবং বিকাশে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়।

