সঞ্চয়পত্রকে সচরাচর একটি নিরাপদ বিনিয়োগের মাধ্যম এবং মাসিক আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে দেখা হয় মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর মধ্যে। তবে এবার সরকারের পরিকল্পনা নতুন করে সুদের হার কমানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা এই জনপ্রিয় বিনিয়োগের ওপর আবারও প্রভাব ফেলতে পারে। অর্থমন্ত্রী ও অর্থ বিভাগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেন মুনাফার হার কিছুটা হ্রাস পায়, যাতে সরকারের আয় ও ঋণ ব্যবস্থাপনা সুসংহত হয়।
গত ছয় মাসে প্রথম দফায় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানো হয়, এবং এখন নতুন করে এই হার আরও হারানো হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এই প্রস্তাবের সারসংক্ষেপ অনুমোদনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন, যেখানে তাদের অনুমোদন পেলেই অর্থ বিভাগ এই নীতি বাস্তবায়ন করবে।
বর্তমানে সর্বোচ্চ মুনাফার হার ১১.৯৮% এবং न्यূনতম ৯.৭২%। তবে, নতুন প্রস্তাবে এই হার গড়ে ০.৫% করে কমানো হতে পারে। বিনিয়োগের পরিমাণ অনুযায়ী মুনাফার হার কম বা বেশি হতে পারে; সাড়ে সাত লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুতরাং মুনাফার হার বেশি থাকবে, আর বেশি হলে কম।
কিন্তু এই হার কমলে সাধারণ মধ্যবিত্তের জন্য উপার্জনের উপায় একপ্রকার সংকুচিত হতে পারে, কারণ তারা এই বিনিয়োগ থেকে বেশি লাভ পাবেন না। গড়ে দেখা যাচ্ছে, পাঁচ বছর মেয়াদি সঞ্চয়পত্রের সাড়ে সাত লাখ টাকার কম বিনিয়োগে ১১.৮৩% এবং বেশি বিনিয়োগে ১১.৮০% এর মতো মুনাফা থাকবে।
উল্লেখ্য, গত জুনে এই হার কিছুটা কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, আর এর ছয় মাস পরে অর্থমন্ত্রী এক নতুন নির্দেশনা আনবেন বলে জানানো হয়েছিল। বর্তমানে দেশের জনপ্রিয় পরিবার সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১.৮০% থেকে ১১.৯৮% এর মধ্যে।
পেনশনার সঞ্চয়পত্র ও অন্য কিছু বিশেষ সঞ্চয়পত্রে এই হার অপরিবর্তিত থাকছে বলে জানা গেছে। তবে, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক, ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড, ও ইউএস ডলার প্রিমিয়াম বন্ডের মতো অন্যান্য বিনিয়োগের সুদের হার অপরিবর্তিত থাকবে।
অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে সরকার ২,৩৬৯ কোটি টাকা ঋণ সংগ্রহ করেছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য উন্নতি। তবে, অনুমান করা হচ্ছে যে পরবর্তী সময়ে এই হার আরো কমতে পারে, যা মধ্যম ও নিম্ন আয়ের পরিবারদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

