সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে নিত্যপণ্যের দামের খুব সামান্য পরিবর্তন দেখা গেছে। কিছু পণ্যের দামে সামান্য পতন হলেও অনেকের জন্য এটা ব্যাপক পরিবর্তন বলে মনে হয়নি। বিশেষ করে নতুন পেঁয়াজ ও আলুর দাম কিছুটা কমলেও পুরোনো পেঁয়াজের দর এখনও ঊর্ধ্বমুখী। সরবরাহের স্বাভাবিকতা না থাকায় পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য এখনো সক্রিয় চেষ্টার প্রয়োজন রয়েছে। পুরোনো পেঁয়াজের বাজারে দামের অস্থিরতা এখনও কাটেনি। বর্তমানে প্রতি কেজি পুরোনো পেঁয়াজের দাম দেড়শ টাকার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
অন্যদিকে, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত নতুন পেঁয়াজ ঢাকার বাজারে ৮০ থেকে ১২০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, সপ্তাহের ব্যবধানে এই পেঁয়াজের দামে প্রায় ১০ টাকার মতো হ্রাস হয়েছে।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রামপুরা, খিলগাঁও, তালতলা ও আশপাশের এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ খুব বেশি বাড়েনি। অধিকাংশ দোকান এখনো পুরোনো পেঁয়াজ বিক্রি করছে। যারা নতুন পেঁয়াজ বিক্রি করছে, তাদের মধ্যে মানের পার্থক্য দেখা গেছে, এর দর বিভিন্ন দোকানে আলাদা।
খিলগাঁও তালতলা বাজারে বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তারা নতুন প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি করছেন। অন্যদিকে, রামপুরার কিছু মুদি দোকানে এই পেঁয়াজের দাম পৌঁছেছে ১২০ টাকা কেজিতে। একজন বিক্রেতা ফরিদ হোসেন বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম বাজারের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ওঠানামা করে। বড় আকারের পেঁয়াজের দাম একটু বেশি। সরবরাহ বাড়লে দাম কমবে।’
এদিকে, আলুর বাজার শুরু থেকেই নিম্নমুখী। আগে যেখানে কেজি দরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন সেটি কমে ৩০ থেকে ৩৫ টাকার মধ্যে এসেছে। পুরোনো আলুও আগের মতো ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
শীতকালীন সবজি তে দামের কমতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপি বর্তমানে ৩০-৩৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা গত সপ্তাহে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ৪০ টাকার উপরে ছিল। বেগুনের দামও কমে এসেছে, লম্বা জাতের বেগুন ৬০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, আর গোলাকার বেগুন চলে ৭০-৮০ টাকায়। শীতের অন্যান্য সবজির মধ্যে শিমের দামেও পার্থক্য দেখা যায়, সাধারণ মানের সবুজ শিম ৪০-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, রঙ্গিন শিমের দাম কিছুটা বেশি হয়ে ৬০-৮০ টাকার মধ্যে।
অপর দিকে, কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিম ও মুরগির মাংসের দাম ব্যাপকভাবে কমে গেছে। ব্রয়লার মুরগির ডিম বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় ডজন। গত সপ্তাহেও একই দামে কিনতে পেরেছিলেন ক্রেতারা। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকার মধ্যে পর্যবস্যমান।
বিক্রেতারা বলছেন, ডিম ও মুরগির দাম কমে যাওয়ায় খামারিরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তারা জানিয়েছেন, দাম কমার কারণে উৎপাদন খরচের চেয়েও তারা কম দামে ডিম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা তাঁদের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে করে পাবন্দ সরবরাহ প্রক্রিয়াও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

