ভোটার তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা কারাগার বা আইনি হেফাজতে থাকলেও পদ্ধতি অনুসরণ করে পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এই ঘোষণা দিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি নির্দেশিকা জারি করেছে, যা বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) উপসচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের স্বাক্ষরিত। এই নির্দেশিকা কারা মহাপরিদর্শকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালা অনুযায়ী, ‘ইন-কান্ট্রি পোস্টাল ভোটিং’ (আইসিপিভি) পদ্ধতির মাধ্যমে জেলখানা বা আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন। এই প্রক্রিয়ায় জেলখানা বা হেফাজতের ভোটারের তালিকা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের মাধ্যমে তৈরি হবে। নিবন্ধনের জন্য একটি বিশেষ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম (https://prisoner.ocv.gov.bd/login) ব্যবহার করা হবে।
অভিজ্ঞতার জন্য, জেলখানা বা আইনি হেফাজত কর্তৃপক্ষ দুজন করে প্রতিনিধি মনোনয়ন করবেন, যারা ওই ভোটারদের নিবন্ধন কাজ পরিচালনা করবেন। নিবন্ধন শেষে, তারা মুদ্রিত তালিকা স্বাক্ষরসহ নির্বাচন কমিশনে পাঠাবেন। পাশাপাশি ভোটারদের প্রয়োজনীয় তথ্য (.xls/.csv ফরম্যাটে) আপলোড করবেন। নিবন্ধিত ভোটাররা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পোস্টাল ব্যালটের খাম পাবেন। এই খামে থাকছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য পৃথক দুটি ব্যালট পেপার, ভোটদানের নির্দেশাবলী, ঘোষণাপত্র এবং রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা সহ ফেরত খাম।
বলা হয়েছে, জেলখানা বা হেফাজত কর্তৃপক্ষ ভোটারদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করে ভোটকক্ষ বা গোপন কক্ষে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। পোস্টাল ব্যালট পেপারে সেখানে কোনো প্রার্থী নাম থাকবে না, শুধু প্রতীক এবং তার পাশে ফাঁকা ঘর থাকবে। ভোটারদের নিজ নিজ সংসদীয় এলাকার প্রার্থীর নাম ও প্রতীক-সংবলিত তালিকা সরবরাহ করা হবে।
সংসদ নির্বাচনে পোস্টাল ব্যালটে ভোটাদানের জন্য, ভোটাররা প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘরে টিক বা ক্রস চিহ্ন (√ বা x) দেবে। গণভোটে হ্যাঁ/না অনুযায়ী একই ব্যবস্থা। ভোট দেওয়ার আগে, ঘোষণাপত্রে নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র লিখে স্বাক্ষর করতে হবে। যদি কোনো ভোটার স্বাক্ষর করতে সক্ষম না হন, তবে অন্য একজন ভোটার তা সত্যায়ন করবে।
ভোট দেওয়ার পর, ভোটাররা ব্যালট দুটি ছোট খামে রেখে তা বন্ধ করবেন। ব্যালট ও স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রের খাম সংশ্লিষ্ট অধিকারি ঠিকানায় পৌঁছে, এরপর বন্ধ করে নির্ধারিত স্থানে বা বাক্সে জমা দিতে হবে।
প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, জেলখানা বা হেফাজত কর্তৃপক্ষ পোস্টাল ব্যালটের খামগুলো নিরাপদে সংরক্ষণ করবেন এবং দ্রুত ডাক বিভাগে পাঠাবেন। ডাক বিভাগের প্রতিনিধি দ্রুত খামগুলো রিটার্নিং অফিসারে পৌঁছে দেবে, এই জন্য কোনো মাশুল দিতে হবে না। সরকারের পক্ষ থেকে এই খরচ বহন করা হবে।

