গাজীপুর সদর উপজেলার সালনা ইউনিয়নে একটি মামলায় ভূমি অফিসের সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদনকে কেন্দ্র করে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যা স্থানীয় মানুষের মধ্যে অনৈক্য ও হতাশার জন্ম দিয়েছে। বাদীপক্ষের অভিযোগ, ভূমি অফিসের একটি প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুয়া, যা ন্যায়বিচার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। মামলার বাদী আহমদ আলী বলেন, আমি ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা করেছি। আমাদের এলাকার ২০ থেকে ২৫টি বাড়ি ও একটি মসজিদের জন্য প্রয়োজনীয় রাস্তার জন্য এ মামলার মূল বিষয়। এই রাস্তা তৈরির জন্য এলাকাবাসী অঙ্গীকারবদ্ধ, এবং স্থানীয় সম্মানিত ব্যক্তিরা সবাই এই রাস্তার পক্ষে। এই রাস্তার মাধ্যমে আমরা আমাদের বাড়ি, মসজিদে যাতায়াত আরও সহজ হয়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তবে, আদালতের নির্দেশে এসিল্যান্ড অফিসের মাধ্যমে ভূমি অফিসে এ বিষয়ে সরেজমিন তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ভূমি অফিসের প্রতিবেদন, যেখানে বলা হয় যে তিনি আপোস করেছেন, সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে বাদীপক্ষের দাবি। তারা জানায়, তারা কখনোই আপোস করেননি। এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার চক্রান্ত করা হচ্ছে বলে তারা উল্লেখ করেন।
বাদীর অভিযোগ, প্রকৃত ঘটনা যাচাই না করে একতরফা ও ভুল তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা চান মিয়ার বিরুদ্ধে এই প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য তারা ক্ষুব্ধ। তারা দাবি করেন, এ ঘটনায় বিচারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে গাজীপুর সদর এসিল্যান্ড অফিসে তৎক্ষণাৎ পুনরায় নিরপেক্ষ ও সত্যতা যাচাই করে তদন্ত করা উচিত।
এদিকে, অবরুদ্ধ যোগাযোগের কারণে চান মিয়ার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। বৈঠক ও ফোনে যোগাযোগের মেহনতের পরও তাঁর মন্তব্য পাওয়া যায়নি। গাজীপুর সদর এসিল্যান্ড অফিসে গিয়ে জানতে পারেন, তিনি বর্তমানে জরুরী মিটিংয়ে রয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহফুজ আহমেদ বলেন, ভূমি অফিসের কেউ সরেজমিনে আসেনি ও আমাদের সঙ্গে কথা বলেনি। কোনো সম্মতি বা মতামত নেননি, তবে কিভাবে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত হলো তা ভালো করে বুঝতে পারছি না। এলাকাবাসী এই প্রতিবেদনকে সম্পূর্ণ অপ্রকাশ্য ও অসত্য বলে অঙ্গীকার প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এই রাস্তা নির্মাণ হলে পুরো এলাকাবাসীর জন্য, বিশেষ করে মসজিদে নামাজ পড়ার মুসল্লিদের জন্য অনেক সুবিধা হবে, যা এখন প্রতিবেদন ভুল হওয়ার কারণে দুষ্কর হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞ ও সচেতন মহলের মতে, কোন মামলার ক্ষেত্রে সরেজমিন প্রতিবেদন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল। যদি এতে ভুল বা পক্ষপাতমূলক তথ্য থাকে, তবে সেটি আদালতের ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে।
অতএব, এলাকাবাসী ও বাদীপক্ষ জোর দাবি জানাচ্ছেন, বিষয়টির পুনরায় সত্যতা যাচাই করে, গাজীপুর সদর এসিল্যান্ড অফিস থেকে একটি নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত পরিচালনা করা হোক, যাতে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে যথার্থ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।
আজকের খবর / বিএস

