বঙ্গবন্ধুর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকে সম্মান জানাতে এবং দেশের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য কাজ করে থাকেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা, তাদের কৃতিত্বের স্বীকৃতি হিসেবে এই দিনটি বিশেষভাবে পালিত হচ্ছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর পিলখানায় মনোমুগ্ধকর উৎসাহ, গৌরव ও মর্যাদার সাথে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২৫’ উদযাপিত হয়। সকাল সাড়ে ৬টায় বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বিজিবি সদর দপ্তরের মহাপরিচালকের সচিবালয়ে রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন করেন। এর পর, সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে পিলখানা এলাকার ‘সীমান্ত গৌরব’ চত্বরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়, যেখানে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বেলা ১০টায় পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরের শহীদ শাকিল আহমেদ হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অবঃ) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কৃতিত্বের স্বীকৃতি স্বরূপ বিজিবি কর্তৃক প্রদত্ত পদক বিতরণ করেন। এই অনুষ্ঠানে মোট ৭২ জনের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীর পদক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বিজিবি পদক (বিজিবিএম), রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক (পিবিজিএম), বিজিবি পদক-সেবা এবং রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক-সেবা।
পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে নির্বাচিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জেলাসহ অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ তাঁদের সংবর্ধনা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করেন। ভবিষ্যতেও বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের পাশে থাকবেন এরকম আশ্বাস দেন তিনি। এ সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি ও বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিজিবি সদর দপ্তরের অভয়ারণ্যে বৃক্ষরোপণ করেন এবং কুচকাওয়াজ ও সীমান্ত কুঞ্জে স্বাক্ষর করেন। বিকেলে, দুপুর ১টায়, তিনি স্থানীয় প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন যেখানে সরকারের বিভিন্ন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সেনা ও সামরিক বাহিনীর সদস্য, গুণগ্রাহী ও মিডিয়া প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজিত এই দিনটি উপলক্ষে পিলখানা ও সারাদেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। সেইসাথে দেশের বিভিন্ন রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন ও প্রীতিভোজের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ইনকিলাবের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী শাহাদাতবরণ করেন। এর পর, দেশের শোকাবহ পরিস্থিতির কারণে সরকার ২০ ডিসেম্বরকে শোক দিবস ঘোষণা করে এবং ওই দিন বিজিবি দিবসের সব অনুষ্ঠান স্থগিত রাখে। এরপর, নির্ধারিত সিদ্ধান্ত অনুসারে ২৯ ডিসেম্বর এই দিবস উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

