বিশ্লেষণমূলক উদ্যোগের অংশ হিসেবে ব্যক্তিগত করদাতাদের জন্য আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে দেশীয় অর্থনৈতিক নীতিমালা ও মানবিক দিক বিবেচনায়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আজ (২৮ ডিসেম্বর) এক আদেশে জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ করবর্ষের জন্য আয়কর রিটার্ন এখন ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত জমা দেয়া যাবে। এর আগে এই সময়মেয়াদ নির্ধারিত ছিল ৩০ নভেম্বর থেকে বাড়িয়ে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ নতুন সিদ্ধান্তে করদাতাদের জন্য সংশ্লিষ্ট সময় আরও স্বাচ্ছন্দ্য ও সুবিধাজনক হবে।
চলমান করবর্ষে অনলাইনে রিটার্ন দাখिल বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে। তবে বয়স ৬৫ বছর বা তার ঊর্ধ্বে থাকা, শারীরিকভাবে অসমর্থ বা বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি, মৃত করদাতার আইনগত প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি নাগরিকরা এই বাধ্যবাধকতা থেকে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। কেউ চাইলেই তারা ই-রিটার্ন দাখিল করতে সক্ষম হবেন।
এছাড়াও, এখন করদাতাদের প্রতিনিধি বা আইনগতভাবে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি তাদের পক্ষে অনলাইনে সহজেই রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। বিদেশে থাকা বাংলাদেশিরাও পাসপোর্ট নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ইমেইলের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে বিদেশ থেকে ই-রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
বর্তমানে কোনও কাগজ বা নথিপত্র আপলোড না করেই অনলাইনে কর পরিশোধ ও রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যাংকিং বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে কর প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-রিটার্ন স্বীকারপত্র সচল হচ্ছে, যা করদাতাদের জন্য অধিক সহজ ও সুবিধাজনক।
এনবিআর করদাতাদের আরও সহযোগিতা দেওয়ার জন্য ০৯৬৪৩৭১৭১৭১ নম্বরে কল সেন্টার চালু করেছে, যেখানে ই-রিটার্ন সম্পর্কিত যে কোনও প্রশ্নের দ্রুত সমাধান পাওয়া সম্ভব। দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত ই-রিটার্ন হেল্প ডেস্কও নানা ধরণের সহায়তা প্রদান করছে।
এনবিআরের তথ্য অনুসারে, এখনও পর্যন্ত শনিবার পর্যন্ত ২৮ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি করদাতা আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। গত বছর একাধিক সময়সীমা বাড়ানোর পর, শেষ সময় ছিল ১৫ ফেব্রুয়ারি।
যদি নির্ধারিত সময়ের পরে জরিমানাসহ রিটার্ন দাখিল করা হয়, তবে মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপিত হবে। সময়মতো না জমা দিলে কর নির্ধারণের প্রক্রিয়া পরিবর্তিত হবে এবং করদাতাকে তাদের মোট আয়ের ওপর কর দিতে হবে। এই পরিস্থিতিতে করের অস্বচ্ছতা বা রেয়াতের সুযোগ থাকছে না; ভগ্নাংশ মাসও পূর্ণ মাস হিসেবে বিবেচিত হবে।
—
এনবিআর ও সরকারি সূত্রের এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেশের করদাতাদের জন্য আরও সুবিধাজনক ও সহজলভ্য করে তুলেছে। করদাতাদের সময়মতো রিটার্ন দাখিলের জন্য উৎসাহিত করা হচ্ছে যেন তারা আইন অনুযায়ী সমস্ত করদায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারেন।

